শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
ডেক্স নিউজ:- গত রাতে আমার নিজস্ব টাইম লাইনে সাভার প্রেসক্লাব সংক্রান্ত স্মৃতি রোমন্থনের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা, অদ্ভূত প্রশ্ন থেকে শুরু করে বিরক্তিকর বিনোদন পর্যন্ত সবকিছুই উপভোগ করছি। সবচেয়ে অবাক লেগেছে প্রেসক্লাবটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সাংবাদিক বন্ধুদের অতিমাত্রার সতর্কতা দেখে। সাংবাদিক বন্ধুরা বেশিরভাগই কথা বলেছেন মোবাইল ফোনে, নয়তো আমার ইনবক্সে লিখে পাঠিয়েছেন নিজস্ব মন্তব্যটুকু। লিখে পাঠানো মন্তব্যগুলো দিয়ে কোলাজ বানিয়ে যদি স্ট্যাটাস আকারে প্রকাশ করি তাহলে সাভার জুড়ে তা আলোচিত হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু কারো আস্থা ও বিশ^াস ভঙ্গ করার কোনো কারণ নেই, ইনবক্সে পাঠানো মতামত বাক্সবন্দী হয়েই থাকুক। তবে তাদের রাখঢাক অবস্থা অনেক কিছুই জানান দিচ্ছে। যেমন প্রেসক্লাব ঘিরে সাভারে সাংবাদিকদের অন্তত তিনটি বিভক্ত ধারা আছে এবং সেগুলোর আওতায় নানা গ্রুপও রয়েছে। অনেকে ফোনে আংশিক, আবার ম্যাসেঞ্জারে বাকি অংশ ব্যক্ত করার ধরনে মনে হয়েছে, কথা লাগালাগি, প্রতিহিংসা, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি প্রেসক্লাবকে দিন দিন বিদঘুটে অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পেশাদার বন্ধুদের অনেকে আত্মমর্যাদা রক্ষায় নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করাই শ্রেয় ভেবেছেন। বেশি প্রচারবহুল, অধিক গ্রহণযোগ্য মিডিয়ায় সম্পৃক্ত কারো কারো বাসনা হচ্ছে, সাংবাদিক সদস্যদের সমর্থন থাকুক না থাকুক প্রেসক্লাবের ভাইটাল পোস্ট পেলে আছি, নয়তো ৩/৪ জন সাংবাদিক নিয়ে সিন্ডিকেট বানিয়ে চলাটাই বেশি ভাল। আবার কেউবা নিরাপদ ছায়া জুটিয়েছেন দাপুটে কোনো নেতার আশ্রয়ে। আমার এসব ধারণা ভুল হয়ে থাকলে, কারো কষ্টের কারণ হলে আমি আগাম ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
বিশ^াস করুন গত রাত ১২ টার আগে সাভার প্রেসক্লাব ঘিরে বিদ্যমান পরিস্থিতির কোনো কিছুই আমার জানা ছিল না। শুধু শুনেছিলাম, প্রেসক্লাবকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ আছে। এর প্রেক্ষিতেই রয়েছে দখল পাল্টা দখলের অভিযোগ। ভেবেছিলাম এ পরিস্থিতি তো সারাদেশের সিংহভাগ প্রেসক্লাবেরই চিত্র। মতভিন্নতা থেকে মতবিরোধ তো আছে জাতীয় পর্যায়েও। তাছাড়া নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রেসক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে এলেও ‘জবর দখলের’ অভিযোগ তোলাটা পরাজিতদের রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। নিজে নিজেই এ সাদামাটা ধারণা পোষণ করতাম। কিন্তু রাতভর নানা ক্ষুদে বার্তা কেবলই উদ্বেগ আর অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে বৈ কি! রাজধানী উপকন্ঠের সাভারে অনেক দক্ষ সাংবাদিকের অবস্থান। তাদের কারো কারো যোগ্যতা, কৌশল, অপরাপর গুণে ঢাকার গণমাধ্যম, সম্পাদকদের নিয়ন্ত্রণ করার কথাও বাজারে চাউর আছে। তাহলে দেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার চলমান পরিস্থিতির আদ্যপান্ত তারাই তো ভাল জানেন। তারপরও ছোট ছোট গ্রুপ আর সিন্ডিকেটে বিভক্তির মাধ্যমে শোষণের বিস্তর সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে; এমন অভিযোগ উত্থাপনে কারো বিরক্তির কারণ দেখি না।
সাংবাদিকদের বিপদাপন্নতায় এখন সারাদেশ ঝাপিয়ে পড়ে না, এগিয়ে আসে না কেন্দ্রও। ফেসবুক নির্ভর কিছু বাদানুবাদের শান্তনাতেই সন্তষ্ট থাকতে হয়। সুতরাং নিজেই নিজেকে রক্ষার প্রস্তুতি রাখতে হয়, আশপাশের সমর্থন আর বিতর্কমুক্ত পরিবেশ হয়ে ওঠে রক্ষাকবচ। এসব কারণে স্থানীয়, জেলা বা আঞ্চলিক পর্যায়ে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
যাহোক গতরাতের স্ট্যাটাস ধরে আরেক শ্রেণীর সাংবাদিকদের (!) অবান্তর সব প্রশ্নেও বিরক্ত হওয়ার যেন সুযোগটাও হারিয়েছিলাম। আহারে সাংবাদিক বন্ধুজন আমাদের, আহারে….। একজন তো রাত আড়াইটায় ফোন করে বলে বসলেন, যথেষ্ঠ ধৈর্য নিয়ে আপনার দীর্ঘ লেখাটি তিন বার পাঠ করলাম। বুঝলাম প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক হিসেবে ৩৭ বছর পর প্রেসক্লাব পরিচালনার দায়িত্বটি নিতে চান। এরজন্য চোখবন্ধ সমর্থন থাকলো আমাদের। আরেকজনের জানতে চাওয়া হলো: তাহলে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা কোন্ গ্রুপকে সমর্থন দিতে চান? জবাবে শুধু হেসে হেসে বলেছি, কোনো গ্রুপকে সমর্থন দেয়ার যোগ্যতা আমাদের নেই। এমনকি ভোট দেয়ার ক্ষমতা কার্ডটিও তিন দশক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
সাভার প্রেসক্লাব কমিটির সাবেক সভাপতি, সেক্রেটারী তিন বন্ধুর প্রশ্ন ছিল, প্রেসক্লাবের ইফতার পার্টিতে আসবেন কি না। এক গ্রুপের অনুষ্ঠানে অংশ নিলে তা বিতর্কিত হতে পারে। এমন প্রশ্নকে প্রশ্নবোধক পরামর্শ বলাটাই ভাল। তাদেরকে বলেছি, সেই ১৯৯৪ সাল থেকেই সাভারের কোনো দাওয়াত পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে থাকি, প্রেসক্লাব হলে তো কথাই নেই। কোনো অবলম্বন ছাড়াই যে প্রেসক্লাবটির সূচণা করেছিলাম সেখানে কিভাবে অনুষ্ঠান হয়, কারা আসে, কী বলে- তা স্বচক্ষে দেখার স্বাদ তো অনেক দিনের। কিন্তু দাওয়াত জোটেনি তাই স্বাদ পুরনের সাধ্য ছিল না। এখন কেউ দাওয়াত দিলে তাতেও প্রশ্নবিদ্ধতার অজুহাতে বাধা দিতে খারাপ লাগবে না? ইফতারির আমন্ত্রণে অংশ নেয়ার মাধ্যমে কোনো কমিটি বা গ্রুপকে সমর্থন দেয়ার সুযোগ নেই। বরং যে কারোর ডাকে সাড়া দিয়ে ‘ঐক্যবদ্ধ প্রেসক্লাবের