শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ককে বৈধতা দিতে নিজেকে বিপত্নিক দাবী করে চল্লিশ বৎসর বয়সী বিধবা সালমা বেগমকে বিয়ের ছপ্পান্নদিন পর বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন স্বামী মোঃ আব্দুল মুব্দিত দেওয়ান (৭৪)। যার মামলা নং সিআর ৭/২০২৪ তারিখ ৪/১/২০২৪, ধারা ৩৮৬/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০/৫০৬/১০৯/৩৪ দণ্ডবিধি। পরবর্তীতে কদমতলি থানার মামলা নং ৭(১)২০২৪ তারিখ ৫/১/২০২৪ এজাহার হিসাবে গন্য হয়।
মামলায় স্বামী নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী পরিচয় দিয়ে দাবি করেন ঘটনার দিন ১ নং আসামী স্ত্রী সালমা বেগম ফুসলাইয়া বাদীকে তার বাসায় নিয়ে অপরাপর আসামীদের সহায়তায় জোরপূর্বক নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে দস্তখত আদায় করেন এবং তাদের দলীয় আজ্ঞাবহ কাজীকে ডেকে কদমতলা বস্তিতে এনে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে কাবিননামা সম্পাদন করেন। পরবর্তিতে তিনি মুক্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান এবং আত্মীয় স্বজনের সাথে পরমার্শ করে মামলা দায়ের করেন। সরেজমিনে জানা যায় উক্ত বাদী স্বেচ্ছায় আসামী বিধবা সালমার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং স্থানীয় কাজী অফিসে নিজ উদ্দোগে বিয়ের জন্য উপস্থিত হন। তিনি তার নিজ বয়স বিবেচনায় স্বেচ্ছায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা কাবিন ধার্য্য করেন এবং স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন, এমন একটি ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। মামলার আসামী সালমা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়- বাদী মোঃ আব্দুল মুব্দিত দেওয়ান দীর্ঘদিন যাবৎ সালমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করে আসছিলেন। প্রথমতঃ রাজী না হলেও পরবর্তীতে আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশিদের মাধ্যমে জীবনের নিরাপত্তা বিধানে তিনি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা কাবিনের প্রস্তাব দেয়ায় বিয়েতে সম্মতি দেন এবং বাদী স্বয়ং প্রতিবেশীদের অনুরোধ করে কাজী অফিসে নিয়ে আসেন এবং স্বেচ্ছায় স্বতস্ফূর্ত ভাবে কাবিননামা সম্পাদন করেন। ভিডিও ফুটেজে সালমার বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়। বিয়ের পর ডিসেম্বর ২৩ পর্যন্ত দাম্পত্যজীবন অতিবাহিত করে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। ফিরে না আসায় যোগাযোগ করলে তিনি বিয়ে এবং সংসার অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি শঠতার আশ্রয় নিয়ে নিরীহ কাজী সহ ৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ছালমা ইসলামের স্বামী মামলার বাদী মুদ্বিত দেওয়ান এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সোনালী খবরের প্রতিবেদককে জানান এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে বিধায় প্রতিবেদককে কিছু জানাতে অস্বীকার করেন। প্রতিবেদক জানতে চায় ছালমাকে আপনি স্ব ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন কিনা? তার জবাবে তিনি বলেন আমাকে জোর জবরদস্তি ওখানে নিয়ে বিয়ে করিয়েছেন। প্রতিবেদক আরো জানতে চান বিয়ের সময় আপনি স্ব ইচ্ছায় ৫০ লক্ষ টাকা কাবিন করেছেন একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়। এ বিষয়ে কিছু বলবেন? তিনি বলেন এগুলো মিথ্যা জোর জবরদস্তি করিয়েছে আমার কাছে রেকর্ড আছে আমি আদালতে মামলা করেছি। আমি এখন দেশের বাড়ীতে থাকি। প্রতিবেদক আরো প্রশ্ন করেন আপনার স্ত্রী ছালমার বিরুদ্ধে ৫৬ দিন পরে কেন মামলা করলেন, জোর জবরদস্তি ভাবে বিয়ে করলে ০১ দিন অথবা ০২দিন পরে মামলা করার কথা। জবাবে তিনি বলেন আমার কাছে কোন প্রমাণ পত্র না থাকায় মামলা করতে সময় লেগেছে। মামলার করার প্রমাণ পত্র ওখানকার স্হনীয় সাংবাদিকরা সংগ্রহ করে দিয়াছেন তার পরে আমি মামলা করেছি।
মামলা করার আগে আপনার স্ত্রী সালমা বেগম আপনাকে আসতে বললে আপনি শুক্রবারে বাসায় আসবেন এবং সালমার মেয়ে আপনাকে বাবা ডাকায় সন্তুষ্ট হয়ে তাদের জন্যে কিছু করতে চান বলে জানান এবং সালমাকে বৈধ স্ত্রী দাবি করে তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করার কথোপকথনের অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন প্রকার উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছ। আসামী সালমা বেগম সুবিচার প্রার্থনা করেছেন এবং দেড়মাসকাল দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করে শঠতার আশ্রয়ে বিয়ে অস্বীকার করায় বাদী আব্দুল মুদ্বিত দেওয়ানের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে সালমা জানিয়েছেন।