শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০১:১৬ অপরাহ্ন
ঢাকা ব্যুরো :ওয়াকার-উজ-জামান সেনাবাহিনীকে আরও নিষ্ঠা ও পারদর্শিতার সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আর্জি জানিয়েছেন। সোমবার ঢাকা সেনা নিবাসে (Army head quarter) এক অনুষ্ঠানে ওয়াকার-উজ- জামান বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম, দ্রুত কাজ শেষ করে সেনা বাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টে ফিরিয়ে নেব। কিন্তু কাজটা দীর্ঘদিন ধরে করে যেতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ধৈর্য রাখতে হবে। পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যতদিন না পর্যন্ত একটা নির্বাচিত সরকার আসে, আমাদের এই কাজটি ধৈর্যের সঙ্গে করে যেতে হবে।’
সেনা প্রধানের এই মন্তব্য নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। অনেকেই মনে করছেন, সেনাপ্রধান আসলে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে ইউনুস সরকারের (Md Yunus government) অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভাল নয়, সেনাপ্রধানের মন্তব্যে তা স্পষ্ট। তিনি ঘুরিয়ে বেহাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজনীতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
বেহাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাংলাদেশে উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে দিনেদুপুরে দেদার চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,চাঁদাবাজি হচ্ছে। প্রকাশ্যে পথচারির ওপর বন্দুক, বোমা, ছুরি নিয়ে হামলা করছে আওতায়ীরা।তিতিবিরক্ত সাধারণ মানুষ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছাত্ররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
গদি বাঁচাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সোমবার ভোর তিনটেয় নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বেহাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লিগকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লিগ বেআইনি অর্থ ঢালছে দুষ্কৃতীদের মধ্যে। টাকা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি, তাঁর জবাবদিহি ইত্যাদির মাঝে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ- জামানের বেহাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগকেই মান্যতা দিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল।
বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ময়দানে আছে। ৫ অগাস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনা বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা দেওয়া হয়। কথা ছিল যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ব্যারাকে ফিরে যাবে সেনা। বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। সেনার উপর নির্ভরতা বেড়েছে সরকার ও পুলিশসহ সাধারণ মানুষের।