শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন
পারভেজ রানা, স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকায় চাঁদার দাবিতে জনসমক্ষে হত্যাকরা ব্যবসায়ীর দাফন হয়েছে নিজ জেলা বরগুনায়।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে নিহত ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের দাফন সম্পন্ন হয়েছে তার নানা বাড়িতে।
নিহত সোহাগের ২ সন্তান রয়েছে। মেয়ে সোহানা (১৪) ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছেলে সোহান (১১) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় ভাঙ্গারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্যবসার শুরুতে তিনি পলাশ নামে একজনের অধীনে কাজ করত। গত ৫ বছর ধরে নিজে ভাঙ্গারী ব্যবসা শুরু করে।
গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে এবং বড় বড় পাথর দিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর লাশের ওপর উল্লাস এবং মুখে পাথর দিয়ে আঘাতের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, সোহাগের সঙ্গে স্থানীয় যুবদল নেতা মঈনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। মাঝে মধ্যে মঈন সোহাগের বাসায় যেতেন এবং একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন। সাম্প্রতি মঈন তার ব্যবসার অর্ধেক ভাগ দাবি করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই বিরোধই সোহাগের হত্যার কারণ।
এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র আইন ও হত্যার ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে।
শতাধিক মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দেশব্যাপী ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সোহাগের পরিবার ও জেলাবাসী এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।