মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
পারভেজ রানা, স্টাফ রিপোর্টার
———————————————————
বরগুনা সদর উপজেলায় শ্যালিকাকে ধর্ষণে বাধা পেয়ে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় হত্যাকারীকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরো এক লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মামলার বাদী রিগান আক্তারকে ধর্ষণ চেষ্টা ও কুপিয়ে আহত করায় দশ বছরের সাজা এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ২৭ ফেব্রুয়ারী রবিবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এই রায় প্রদান করেন। রায় প্রদান কালে আসামী কাঠ গড়ায় হাজির ছিলেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম ইলিয়াস পহলান (৩৪)। সে বরগুনার সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেন পহলানের ছেলে।
এই তথ্য নিশ্চিত করেন আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা শিপু। তিনি রায়কে একটি দৃষ্টান্তমূলক হিসাবে থাকবে। রায় সমাজের অপরাধ কমিয়ে আনতে গন্য হবে বলে তিনি আশা করেন।
গত ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে ইলিয়াস পাহলান নামে একজন নিজ শালীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। ধর্ষণ করতে বাধা দিলে শ্যালিকাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সে। এসময় ঘরে থাকা রিগানের তিন বছরের শিশুকে কুপিয়ে হত্যা করে। একই সঙ্গে ১৩ বছরের শিশু প্রতিবেশীর ছেলেকেও কুপিয়ে হত্যা করে।
মামলার সূত্র জানায়, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের রোডপাড়া গ্রামে নিজ শালিকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তাঁর দুলাভাই ইলিয়াস। মা বাড়িতে না থাকায় বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে তিন বছরের শিশুকন্যা ও প্রতিবেশী এক শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন শালী রিগান। এই সুযোগে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে ইলিয়াস তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেন তিনি। এক পর্যায়ে ঘরে থাকা দা উঁচিয়ে ইলিয়াসকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় ইলিয়াস হাত থেকে দা কেড়ে নিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় পাশে ঘুমানো প্রতিবেশী শিশু জেগে উঠে ইলিয়াসকে বাধা দেয়। তাকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে ইলিয়াস। পরে ওই নারীর শিশুকন্যাকে কুপিয়ে সে বাড়ি ফিরে যায়।
সকালে প্রতিবেশীরা এক শিশুর মরদেহ এবং ওই নারী ও তাঁর মেয়েকে জখম অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং মা ও শিশুকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে রাতে এ ঘটনার পর নিজ বাড়িতে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে ইলিয়াস। সকালে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অন্যদের সঙ্গে সেও ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা স্বীকার করে ইলিয়াস।