মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন
মহিদুল ইসলাম (শাহীন) খুলনা থেকে।
খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলায় দিগন্তজোড়া বিস্তীর্ণ মাঠে সরোজমিনে দেখা যায় বাতাসে দুলছে চোখ জুড়ানো সোনালী ধানের ক্ষেত। ধান কাটা শুরু হয়েছে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। তবে ধান কেটে নিরাপদে ঘরে তোলার কাজে কৃষক দিনরাত পরিশ্রম করছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে,চলতি বছরে উপজেলার ৭
ইউনিয়নে ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যার অধিকাংশ হাইব্রিড এবং গত বছরের তুলনায় ৬০০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে । অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। উপজেলার জলমা ইউনিয়নের দরগাতলা গ্রামের কৃষক মৃম্ময় বিশ্বাস,ঝড়ভাঙ্গা গ্রামের কৃষক তুলসী ও অচিন্ত্য গোলদার এই বছর প্রথম ডায়াবেটিস
রাইচ ( ব্রিধান১০৫) ধানের চাষ করে রিতিমত হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন। কৃষক মৃম্ময় বলেন,এ বছর প্রথম ডায়াবেটিস রাইচ চাষ করে ৫০ শতক জমিতে ৪০ মন ধান পেয়েছি । আমার এই ধান এলাকার অন্য কৃষকেরা দেখতে আসছে এবং বীজও চাচ্ছে অনেকে । সাচিবুনিয়া গ্রামের কৃষক রাজু মিস্ত্রি, মিহির গোলদার,শুড়িখালী গ্রামের কৃষক মোঃ হেমায়েত হোসেন ও হরিনটানা গ্রামের কৃষক মোঃ ওসিকুর এই প্রথম বাসমতি ধান
(ব্রিধান-১০৪) চাষাবাদ করেছেন। তারা বলেন,আমারা এক একর জমিতে ৮৩ মন ধান ফলন পেয়েছি। এধানের খুবই সুঘ্রাণ ছড়াছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায় বলেন,দেশের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব সময় কৃষকের পাশে থেকে উঠান বৈঠক, ভ্রাম্যমাণ কৃষি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বোরো ধানের ভালো ফলন পাচ্ছে।
ইতিমধ্যে ব্রিধান -১০৮ এর নমূনা শস্য কর্তন করেছি তাতে হেক্টর প্রতি ৮.৮২ মে,টন পেয়েছি। এছাড়া বাসমতি ধান (ব্রিধান১০৪) ও ডায়াবেটিস রাইচ (ব্রিধান১০৫) খুবই ভালো ফলন। আগামীতে এই সকল জাতের ধান দেশের খাদ্যের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বোরো ধানের সর্বোচ্চ ফলন পেতে আমারা কৃষকদের সাথে দলীয় আলোচনা,প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, আধুনিক জাতের ব্যবহার, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, জমিতে গাছের ডাল পুঁতা,আলোক ফাঁদ ও উৎপাদন বিষয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে যাচ্চি। এ বছর গত বছরের তুলনায় অনেক আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ধানের ভালো ফলনে কৃষকেরা খুশি।
সার্বিক বিষয় খুলনা জেলা কৃষি দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় বোরো উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ৬৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এ মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে অর্জিত হয়েছে ৬৫ হাজার ৫৩৬ হেক্টর। এ পর্যন্ত ৫৫% ধান কর্তন হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলন হিসেবে ৩ লক্ষাধিক মে,টন উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। চলতি বছরে রোপা আমনে পোকামাকড় কম থাকায় ফলন অনেক বেড়েছে।