1. admin@dailyoporadhonusondhanltd.net : admin :
শিরোনামঃ
-:একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি:- পবিত্র ঈদ – এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে গোপালগঞ্জে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বরগুনায় তুচ্ছ ঘটনায় আহত-২ ” খাবারের ভাতে প্রসাব করলেন প্রতিপক্ষ পুলিশ লাইন্স একাডেমি এডুকেশন কর্তৃক পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন কালাই কাঁটাহার দাখিল মাদ্রাসায় মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’র অভিযানে, বন্দর থানার গার্মেন্টস কর্মী স্ত্রীকে হত্যা মামলার পলাতক আসামি ঘাতক স্বামী কাজী মোঃ পেয়ার আহম্মদ প্রকাশ রিপন গ্রেফতার।  র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’র পৃথক অভিযানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি কুখ্যাত  সন্ত্রাসী মোঃ ইসতিয়াক আলী ওয়াছিফ গ্রেফতার। বটিয়াঘাটায় মামলাবাজ কালাম মাস্টারের ষড়যন্ত্রের শিকার কেয়ারটেকার সরো গত ১৪-০৯-২৪প্রকাশিত একটি দৈনিকে বাড়ি দখলের যুবদল নেতার শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জয়পুরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ১০ জন যাত্রী

প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় আয়া থেকে কোটিপতি ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তা

  • আপডেট সময়ঃ রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪
  • ১২ জন দেখেছেন

মোহাম্মদ মিলন আকতার,রংপুর বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান:-

ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তা রানী আয়া থেকে বিপুল সম্পদের মালিক। অভিযোগ আছে স্বামী মারা যাওয়ার পরে চারিদিক শূন্য হয়ে পড়েন মুক্তা রানী রায়। চাচাতো ভাই দুলালের মাধ্যমে আয়া পদে চাকরি শুরু করেন সিভিল সার্জন অফিসে। চাকরিতে থাকা অবস্থায় সখ্যতা গড়ে ওঠে সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে। তাঁর সব চাহিদা পূরণ করতে থাকে রমেশ, তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
চার বছর চাকুরি করে শুরু হয় মুক্তা রায় থেকে মুক্তা সেনের কোটিপতি হওয়ার উত্থান। কয়েক বছর আগেও যার নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেত সেই মুক্তা শত কোটি টাকার মালিক। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চকহলদি গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা রানী। কোর্টে মুহুরি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তার স্বামী। যা আয় হতো তা দিয়ে সংসারে সবসময় ছিল টানাপড়েন। স্বামী মারা যাওয়ার পরে দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আয়া পদে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি।

পরে আয়া পদ থেকে চাকরি ছেড়ে নজর দেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালের কেনাকাটা, খাবার, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শুরু হয় তার। তারপর থেকে হাসপাতালের সব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হয়ে ওঠেন হাসপাতালের রানী মুক্তা সেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে- ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট, রেন্ট-এ কার সেন্টারের শোরুম, ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের ইসলামবাগে দোতলা বাড়ি, শান্তিনগরে দুই জায়গায় প্লট আকারে ৫ শতক করে জমি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলএসডি গোডাউনের পাশে ১০ শতক জমি, পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের পাশে ৩ পিএম চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাদুপাড়ায় বাড়ি-জমি ও সয়াবিন তেলের কারখানা, চন্ডিপুরে জমিসহ বাড়ি, মিল-চাতাল ও পুকুর ২ কোটি ৮ লাখ টাকায় কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা অগ্রিম, আবাদি জমি রয়েছে ২০ বিঘা।

সদরের গড়েয়া বাসস্ট্যান্ডে ৮ শতক জমির ওপরে বাড়ি। এ ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্য, জমি দখলসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি ও বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডার রয়েছেন তিনি। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের নওগাঁর অটো রাইস মিল কয়েক কোটি টাকায় কিনেছেন এই মুক্তা সেন। চলতি বছরে মুক্তা সেনের দুই ছেলে তূর্য ও মাধুর্য এন্টারপ্রাইজ নামে পূবালী ব্যাংক হিসাব নম্বরে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৩৮ লাখ ২০৯৯ টাকা। সাবেক মন্ত্রী ও এমপি রমেশ চন্দ্র সেন আটক হওয়ার পর দিন সব টাকা তুলে নিয়ে বর্তমানে রয়েছে ৬ হাজার ৪১৭ টাকা। এ ছাড়াও জনতা, অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংকেও তাদের হিসাব নম্বরে দুই বছরে লেনদেন রয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। নিজের আখের গুছিয়ে ক্ষান্ত হননি এই মুক্তা সেন। ভাইদের রাজনীতিতে যুক্ত করে ঠিকাদারি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দেওয়া। আর ভাতিজা-ভাতিজিদের সরকারি চাকরিও নিয়ে দিয়েছেন এই মুক্তা সেন।

হত্যা মামলায় ভারতে পলাতক থাকা বড় ভাই নারায়ণ ঠাকুরকে এসে যুক্ত করান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। মন্ত্রীর প্রভাব আর রাজনৈতিক দাপটে তারা হয়ে ওঠেন আরও প্রতাপশালী। তার খালাতো ভাই দুলালকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, খালাতো বোনের ছেলে নিপুণকে হাসপাতালের ঠিকাদারি, বোনের মেয়ে মৌকে স্কুলের শিক্ষিকা, আরেক বোনের ছেলে জয়কে ফোর্সসহ রাজস্ব ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি দিয়েছেন তার দুই শতাধিক আত্মীয়স্বজনকে।
মুক্তা রায়ের খালাতো ভাই ফণি রায় বলেন, সবাই আমাকে বলে মন্ত্রী আর এমপি নাকি আমার ভগ্নিপতি। আমি বলেছি বিয়ে তো খেলাম না। তবে মুক্তার পারিবারিক অবস্থা খারাপ ছিল। শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। পরে নিজে বাড়ি কিনেছে। আমাদের আত্মীয়স্বজনের চাকরি নিয়ে দিয়েছে। এলাকায় কিছু জমি কিনেছে। স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সবাই তাকে ‘এমপির দ্বিতীয় বউ’ হিসেবে চিনতাম। ভালোই জমি- জমা কিনেছেন। তার ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজনদের চাকরি দিয়েছেন। তাদের বংশের সবার চাকরি হয়েছে। এলাকার স্কুলগুলোতে অনেককে চাকরি দিয়েছেন। তার বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন, আবার কারও কাছে জমি নিয়েছে। পাশেই মিল চাতাল পুকুর ২ কোটি ৮ লাখ টাকায় কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা গত মাসে অগ্রিম দিয়েছেন।

মুক্তা রানীকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ২০১০ সালে মুক্তা রায় আয়া পদে যোগদান করেন। পরে ২০১৪ সালে তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাহসীন মুনাবীল হক বলেন, আয়বহির্ভূত সম্পদ উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই। মুক্তা রানী এসবে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলে জানান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন। হাসপাতালের কর্মীরা বলেন মুক্তা সবার উপর ছড়ি ঘুড়াতেন। যথাযথ আইনের আওতায় আনার কথা জানান।

শেয়ার করুন

আরো দেখুন......