আশরাফুল আলম সরকার,বিশেষ প্রতিনিধি: শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের প্রত্যেকটি স্তম্ভ ধ্বংস হলেও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় দেশের শান্তি বিনষ্টের চেষ্টাই সোচ্চার হচ্ছেন।

হাসিনা পালানোর পর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের পতন হলে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা ঘুরঘুর করবে। এদের থেকে বাংলাদেশের জনগণকে সচেতন এবং প্রতিহত করার প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন তিনি। ওনার এই বাণী সত্য প্রমাণিত হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী প্রেতাত্মাদের কাজকর্মে।

যেমন, গতকাল রবিবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলাধীন মাওনা ইউনিয়ন বারতোপা বাজার আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি নেতা মুক্তারুল করিম মোড়ল শামীম।
খোকন চেয়ারম্যান এর অবৈধ কাজ কর্মের প্রতিবাদ করায় মুক্তারুল করিম মোড়ল শামিম সহ আনোয়ার হোসেন, শ্যামল মোড়ল,জিহাদ মোড়ল, নাহিদ, ইমরান হোসেনদের এর উপর হমলা করেন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির খোকন বাহিনী। খোকনের বাহিনীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় মোক্তারুল করিম মোড়ল শামিম কে হত্যার উদ্দেশ্যে দা, চাপাতি, রড ও হকিস্টিক নিয়ে মাওনা বারতোপা বাজারে খোকন বাহিনীর হামলার স্বিকার হন।

এই জাহাঙ্গীর কবির খোকন চেয়ারম্যান কে কল করা হলে কল রিসিভ করেনি তিনি । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রীপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। উক্ত মামলার
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হচ্ছে
জাহাঙ্গীর আলম খোকন,মোঃ রায়হান (২৫), মোঃ মেহেদী (২৪), মোঃ সজিব (২২), মাহবুবুর রহমান ঝলক (২৬),কলিম উদ্দিন (৪২), সোহেল সরকার (২৮), মোঃ আহাদ (২২), মোঃ আরাফাত (২৭), মোঃ আহাদ (২৫), মোঃ আলামিন (২৬), মোঃ রাব্বানি (২৫), মোঃ শাহিন (২৫), সামেদ আলী (৫০), নজরুল ইসলাম (৪০), মোঃ রনি (২৮), আসাদুল (৩৮), আসাদুল মিয়া (২৯),হারুনুর রশিদ (৪০), মোঃ কালাম (৪০), মোঃ আকাশ (২৫), গফুর মিয়া (৫০), মোঃ কাশেম (৪৫), মোঃ আইয়ুব আলী মেম্বার (৫০), মেহেদী হাসান সৌওকত (৪০), রফিকুল ইসলাম (৪০), আশরাফ (৪৫),মোঃ শাহীন (২৪), সাফায়েত হোসেন (৩১),মোঃ মারুফ (২০), মোঃ স্বাধীন (২৪), রফিক (৫০), মোঃ সফিকুল (৪৯), মোঃ হাসান (২৭), সহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়ে যে, বিবাদীগণ এলাকায় খুবই খারাপ, একদলবদ্ধ, দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হিসাবে পরিচিত। বিবাদীরা এলাকায় প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে প্রায় সময়ই দাঙ্গা হাঙ্গামা করিয়া বেড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার তারিখ অর্থাৎ ২২/০৯/২০২৪ ইং সকাল ১০.৩০ টার সময় আমি, আমার সঙ্গীয়- মেহেদী হাসান নাহিদ (২০), শ্যামল (২৭), জিহাদ ওরফে জেমি (২৪) গণ বারতোপা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পাকা রাস্তায় পৌছা মাত্রই পূর্ব থেকে উৎপাতিয়া থাকা উক্ত বিবাদীগণসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন বিবাদী

পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রাজনৈতিক বিষয়াদীকে কেন্দ্র করিয়া ধারালো দা, লাঠি, লোহার রড, চাপাতি, হকিস্টিক ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র-সন্ত্র সহ পিস্তল নিয়া আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে এবং ১নং বিবাদীর হুকুমে ও উপস্থিতিতে সকল বিবাদীগণ আমাকে এলোপাথারি কিল, ঘুষি, লাথি মারিয় ও লাঠি, লোহার রড, হকিস্টিক দিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করিয়া নীলাফুলা জখম করে।
২নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা ধারালো লোহার রড দিয়া আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথার উপরিভাবে স্বজোরে আঘাত করিলে, আমি পিছনে কাত হইয়া পড়িলে উক্ত আঘাত আমার নাকে লাগিয়া নাকের নরম হাড় ভাঙ্গিয়া রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়। ঐ সময় আমি চিৎকার দিয়া মাটিতে লুটাইয়া পড়িলে ৩নং বিবাদী আমার বুকের উপর বসিয়া আমার মৃত্যু নিশ্চিত করার লক্ষে তার দুই হাতে আমার গলায় চাপিয়া ধরিয়া শ্বাসরোধ করত: হত্যার চেষ্টা করিয়া গলার নিচে ফুলা জখম করে। তখন আমার সঙ্গীয়- মেহেদী হাসান নাহিদ, শ্যামল, জিহাদ ওরফে জেমি আমাকে রক্ষা করার জন্য ঝাপাইয়া পড়া মাত্রই বিবাদীগন তাদেরকেও এলোপাথারী ভাবে মারপিট শুরু করে। ৪নং বিবাদীর হাতে ধারালো দা দিয়া জিহাদ ওরফে জেমিকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্ব-জোরে তাহার মাথায় কোপ মারিলে সে পিছনে কাত হইয়া পড়িলে উক্ত কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া তার কপালের উপরী ভাগে লাগিয়া ব্যাপক বিস্তৃত কাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয় এবং ৫নং বিবাদী তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া শ্যামলের মাথায় স্বজোরে কোপ মারিলে উক্ত কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া কপালের উপরী ভাগে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম করে। ৪নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া মেহেদী হাসান নাহিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার মাথার উপরী ভাগে স্ব-জোরে কোপ মারিলে উক্ত কোপ তার কপালের বামপার্শ্বে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়। তখন আমাদের চিৎকারে বারতোপা বাজারে থাকা সাদ্দাম ও আনোয়ার আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন তাদেরকেও মারপিট করিতে থাকে এবং ৬নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া আনোয়ারকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার মাথায় কোপ মারিলে উক্ত কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া তাহার গালের ডানপার্শ্বে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত মারাত্মক জখম হয়। ৭নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া তাহার মাথা লক্ষ করিয়া স্বজোরে কোপ মারিলে সে সরিয়া যাওয়ায় উক্ত কোপ তাহার গালের বাম পাশে লাগিয়া কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ঐ সময় আমাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিতে ১ ও ২নং বিবাদীদ্বয়ের কোমড় থেকে পিস্তল বাহির করিয়া ফাকা গুলি ছুরে এবং ৩ থেকে ৩০ নং বিবাদীগন একাধিক ককটেল ফুটাইয়া জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করিয়া চলিয়া যায়।

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমি ও আমার সঙ্গীয় লোকজন একটি অটোরিক্সা যোগে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাদের প্রাথমিকি চিকিৎসা প্রদান পূর্বক উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসাপতাল, গাজীপুর রেফার্ড করেন। বর্তমানে আমি ও অন্যান্য জখমীরা গাজীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকিয়া চিকিৎসাধীন আছি। আমি হাসপাতালে ভর্তি থাকিয়া অত্র অভিযোগ লিখাইয়া আমার নিজ নাম স্বাক্ষর করতঃ আমার ছেলে- জিয়াউল করিম রিফাত এর মাধ্যমে থানায় প্রেরণ করিলাম।

এই বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন কে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলেন অভিযোগ পেয়েছি তদন্তের সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে