পারভেজ রানা স্টাফ রিপোর্টার
স্বামীকে যৌতুক দিতে না পারায় ছয় মাসের গর্ভতবী স্ত্রীকে পিটিয়ে ও লাথি মেরে হত্যা করার অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় আসামী স্বামীকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ২৩ বছর মামলাটি পরিচালনার পর আজ ৩০ জুন সোমবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী হলো, বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামের আঃ আজিজ হাওলাদারের ছেলে মোঃ কামাল হোসেন (৪৫)। রায় ঘোষনার সময় আসামী পলাতক ছিল। এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর রনজুয়ারা সিপু।
জানা যায়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার নিহত জাহানারা বেগমের বাবা মোসলেম উদ্দিন ২০০৩ সালের ২২ অক্টোবর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন। অভিযোগে তার মেয়ে জাহানারাকে পাঁচ বছর আগে কামাল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেয়। সেখানে জাহানারার আড়াই বছরের খাদিজা নামের একটি মেয়ে রয়েছে। জাহানারা আবার ছয় মাসের গর্ভবতী হয়। ২০০৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কামাল হোসেনসহ তার পরিবারের লোকজন বাদির মেয়ের নিকট ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবী করে। জাহানারা যৌতুক দিতে অস্বীকার করে। এমন সময় কামাল হোসেন উত্তেজিত হয়ে জাহানারা বেগমের তলপেটে লাথি মারে ও পিটিয়ে জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় জাহানারাকে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
মামলার বাদী মোসলেম উদ্দিন বলেন, আমার জামাতা কামাল হোসেন ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ফোন দিয়ে আমাকে জানায় জাহানারা খুব অসুস্থ। যে কোনো সময় জাহানারা মারা যেতে পারে। আমি পরেরদিন কামাল হোসেনের বাড়ি এসে দেখি আমার মেয়ের লাশ কামালের উঠানে। আমার মেয়ের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন। বামনা থানায় মামলা করতে গেলে তারা একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরে আমি তথ্য নিয়ে ২২ অক্টোবর ওই ট্রাইব্যুনালে মামলা করি।
বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউট রনজুয়ারা সিপু বলেন, বাদি ৯ জনকে আসামী করে মামলা দেয়। তদন্তে ৮ জন আসামী সংশ্লিষ্টতা পায়নি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক রায় ঘোষনার সময় মন্তব্য করেন। দীর্ঘ ২৩ বছর পরে রায় দিতে হলো। ৯ জন স্বাক্ষ্য অনেক আগে সমাপ্ত হয়েছে। রাস্ট্র পক্ষ সচেতন হলে ২৩ বছর অতিবাহিত হতো না। বাদি এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। আসামীর আইনজীবী তোফাজ্জেল হোসেনও মারা গেছেন। আসামী পলাতক থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।