পারভেজ রানা,স্টাফ রিপোর্টার:
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে আর দুর্নীতি, অনিয়ম আর ভেজালের বিরুদ্ধে ফের তালতলীতে ফুঁসে উঠেছে বরগুনার তালতলীর সাধারণ মানুষ। এবার উপজেলার বন্দর এলাকার টি এন্ড টি সড়কে নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করায় কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দিয়ে সুরহা মেলেনি। জনগণের দাবীর মুখে নিন্মমানের ইট ও উপকরণ দিয়ে সড়ক নির্মাণ অব্যাহত থাকলে ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটায় এই ঘটনা সৃষ্টি হয় তালতলী বন্দরের টি এন্ড টি মোড়ে। এলাকাবাসী দুর্নীতি ও ভেজাল কাজ বন্ধে আয়োজন করে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন। তারা সেখানে এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। এ সময়ে তারা ‘জনগণের টাকায় ভেজাল চলবে না’, ‘দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চাই’, ‘দুর্নীতিবাজদের আস্তানা তালতলীতে হবে না। এমনিভাবে স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষোভে।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও টিভি মেকার ধীরেন চন্দ্র বলেন, “এই রাস্তা আমাদের প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে। এখন দেখা যাচ্ছে, এক চাপেই ইট গুঁড়ো! এটা কোনো উন্নয়ন না, এটা জনগণের সাথে নির্লজ্জ উপহাস। এটা প্রমাণ করে—কাজের নামে দুর্নীতির হোলি খেলা চলছে।”
গাড়িচালক সোনা মিয়া বলেন, “এই রাস্তা ভেঙে গেলে আমরা প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করবো। স্কুলগামী শিশু, অসুস্থ মানুষ—সবাই চরম ভোগান্তিতে পড়বে। এই কাজ যারা করছে তারা জনগণের শত্রু।”
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের কর্মরত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকৌশল কর্মকর্তার যোগসাজশে চলছে এই নির্মাণ তামাশা। তারা আরও বলেন, “বারবার অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসন যেন চোখ বুজে আছে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে চুপ করে আছে।”
তরুণ সমাজকর্মী রাসেল হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দুই হাজার ৩শ মিটারের কাজ ১কোটি ৬১ লাখটাকা বরাদ্দ। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দ্রুত কাজটা শেষ করতে চাচ্ছে তারা। তাদের সহায়তায় একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। আমরা আর মুখ বুজে থাকব না। তদন্ত যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে আমরা উপজেলা অফিস ঘেরাও করব। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে।”
উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান, “আমরা গতকাল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বরগুনার সাগর এন্টারপ্রাইজকে নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছি। কথা না শুনলে ব্যবস্থা নেবো।”
তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “নোটিশ নয়, এখন সময় আইনি পদক্ষেপের। জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। উন্নয়নের নামে জালিয়াতি আর বরদাস্ত করা হবে না। তাদের স্পষ্ট বার্তা—দুর্নীতির জবাবদিহি চাই। প্রয়োজন হলে রাস্তাজুড়ে জনতার স্লোগানে প্রকম্পিত হবে প্রশাসন, কিন্তু দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না।”