পারভেজ রানা, স্টাফ রিপোর্টার:
বরগুনায় ভেঙে ফেলা হচ্ছে দেশের একমাত্র বঙ্গবন্ধু নৌকা যাদুঘর। এটি ভেঙে নির্মাণ করা হচ্ছে বরগুনা পৌর গণ পাঠাগার। জেলা আইনজীবী সমিতির পশ্চিম পাশে সামনে নির্মিত এই নৌকা যাদুঘরটি বরগুনা জেলা প্রশাসন নির্মাণ করে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। পৌর পাঠাগার ভেঙে বঙ্গবন্ধু নৌকা যাদুঘর করায় আজ এটি ভেঙে দেয়া হচ্ছে বলে দাবি স্হানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের।
শেখ মজিবুর রহমানে জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে তৎকালীন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকার ও জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর নৌকা যাদুঘর কাজের উদ্ভোদন করে। ৭৮ শতক জমির ওপরে ৮১ দিন ধরে কাজ করে এটি নির্মাণ করা হয়।
১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার আদলে নির্মিত জাদুঘরটির দিকে তাকালে দেখা যাবে একটি বড় নৌকা এমনটাই নির্মাণ করা হয়েছিল। এর মূল ভবন ৭৫ ফুট, প্রতিটি গলুইয়ের দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট।
জাদুঘরে রয়েছে দেশ-বিদেশের নানান আকৃতির একশ’ প্রকারের নৌকার অনুচিত্র, একটি নৌকা গবেষণা কেন্দ্র, আধুনিক লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা, ৯ডি থিয়েটার ও একটি ফুড ক্যাফে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কতিপয় শ্রমিক গ্যাস দিয়ে কেটে ফেলছে এই নৌকা যাদুঘর টিকে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বাধার মুখ পড়তে হয় গণমাধ্যম কর্মীদের। বাধাকারীদের দাবী নৌকা যাদুঘরটি আগের পৌর গণ পাঠাগার ধ্বংস করে এখানে গত আওয়ামী লীগ সরকার রাস্ট্রীয় সম্পদ লুট করে এখানে তারা তাদের দলীয় প্রতীক নৌকা তৈরি করেছে। বরগুনার মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিচ্ছবি রাখবেনা বলেই এটির আকার পরিবর্তন করে বরগুনা পৌর পাঠাগার নির্মাণ করা হবে।
এবিষয়ে বরগুনার পরিবেশ আন্দোলন কারী আরিফুর রহমান বলেন, দেশের নৌকা ঐতিহ্য তুলে ধরতে নৌকা যাদুঘর করার পরামর্শ দিয়েছিলাম তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহকে। সেজন্য দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে ১০১ টি নৌকার প্রদর্শনী করা হয়েছিল নৌকা যাদুঘরে। এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৌকা সম্পর্কে জানাতে। আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা হিসেবে এই নৌকা যাদুঘরটি স্হাপন করেনি। নৌকা যাদুঘরে যতগুলো নৌকা স্হান পেয়েছিল তত গুলো নৌকা জাতীয় যাদুঘরেও স্হান পায়নি। তবে তিনি দাবী করেন শুধুমাত্র নাম করণের কারণেই এই নৌকা যাদুঘরটি ধ্বংস হয়ে গেল। তিনি আরো বলেন এটি পুরোপুরি ধ্বংস না করে নৌকার এতিহ্য তুলে ধরতে এটি ধ্বংস না করতে।
এবিষয়ে বরগুনা জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আ্যভোকেট রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের সম্পদ, রাস্ট্রের টাকা অপচয় করে এই নৌকা যাদুঘর নির্মাণ করেছিল। নৌকা যাদুঘর নির্মাণের আগে এখানে পৌর গণ পাঠাগার ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পাঠাগারটি ধ্বংস করতে তাদের দলীয় প্রতীক নৌকা যাদুঘর নির্মাণ করে। বরগুনাবাসী পুনরায় এখানে পাঠাগার দেখতে চায় বলে যাদুঘরটির নৌকার নকশা পরিবর্তন করা হচ্ছে, তবে এটি পুরোপুরি ধ্বংস করা হবেনা বলে তিনি জানান।