নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নিহত ভিকটিম মোঃ ফারুক (৩২) নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার সৈয়দপুর গ্রামের মোঃ দুলালের ছেলে। সে দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামের এসএস ফার্নিচারের দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। তার পরিবারে স্ত্রী ও ২ সন্তান রয়েছে। দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৪৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানাধীন মুরাদপুর এন মোহাম্মদ প্লাষ্টিক এর বিপরীত পাশে জুমাইরা বিল্ডিং এর সামনে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করছিল। উক্ত কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারী প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার উপর আওয়ামীলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়িভাবে বোমা বিস্ফোরণ সহ দা-কিরিচ, লোহার রড, চাপাতি দিয়ে আঘাতসহ শর্টগান এবং পিস্তল ইত্যাদি দিয়ে গুলি চালিয়ে বহু ছাত্র জনতাকে আহত করে। এ সময় ভিকটিম ফার্নিচারকর্মী মোঃ ফারুক তার কর্মস্থল থেকে বহদ্দারহাটে ভাত খাওয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় মুরাদপুর পৌঁছালে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে বুকে, পেটে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে আনুমানিক ১৭৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোঃ দুলাল বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় ২৬৯ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- নং ৩১, তারিখ- ২৮ আগস্ট ২০২৪ইং ধারা- ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০২/১০৯/৩৪ দ্য পেনাল কোড ১৮৬০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি আবদুল নবী লেদু চট্টগ্রাম মহানগরীর খুশলী থানাধীন গরীবুল্লাহ শাহ মাজার এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ০৫ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৮১০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি আবদুল নবী লেদু (৫০), পিতা-আব্দুল হাকিম, সাং-হাজী ভবন অক্সিজেন মোড়, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা-চট্টগ্রাম'কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামি মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল বলেও জানায়।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামির পিসপিআর পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।