মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পঞ্চগড় প্রতিনিধি।। দেশের ৩৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়। যার মধ্যে পঞ্চগড় জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্বস্তির নিঃশ্বাসনিতে শুরু করেছেন জেলার সাধারণ মানুষ। জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম এর দ্বায়িত্ব পালন কালীন সময় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনা ঘটলেও তিনি কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। এমনকি তার সময় বিভিন্ন কম্পানি/ ভুমিদস্যুদের নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তিনি সব কিছু দেখে যেন না দেখার অভিনয় করে গেছেন। স্থানীয়রা জানান, জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ৭নং দেবনগর ইউনিয়নে বেক্সিমকো কম্পানি ও ল্যান্ডকো কম্পানি তিন ফসলি জমিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি কিনে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তার পরেও ভুয়া মালিকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বার বার গেলেও কোন লাভ হয়নি। দেবীগঞ্জ শালডাংঙ্গা ইউনিয়নে নদীর তীরে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার কাজ চলমান এবং একাধিক সংবাদ প্রকাশ করা হলেও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। দেবীগঞ্জ সহ অন্যান্য উপজেলায় মুজিব বর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও এ ঘটনায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ করা হলে দেবীগঞ্জ উপজেলার ওয়েবসাইট থেকে ঘর প্রাপ্তদের তালিকা মুছে ফেলা হয়। তাতেও জেলা প্রশাসক ছিলেন নিরব। প্রকৃত অনেক গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার থাকা সত্যেও পঞ্চগড় জেলাকে প্রথম গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত জেলা অত্যন্ত আনন্দের সাথে ঘোষণা করা হয়। আবার অনেকে ঘর পেলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই ঘরে বসবাস করছেন। ব্যাক্তিগত ক্ষোভে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা প্রতিবন্ধীকে হাজতে পাঠানোর পরেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। তেতুলিয়ায় নদীর জমি নদী শ্রেণীভুক্ত না করে ব্যাক্তি মালিকানাধীন করার সংবাদ প্রকাশ করা হলেও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। ভারত-বাংলাদেশ পাইপ লাইনে জমি অধিগ্রহণ করার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো টাকা তুলতে পারেনি অনেকেই। সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন সময়ে ভূমি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তার ব্যাপক ঘুষ বানিজ্য ও অনিয়মের ঘটনা ঘটলেও তিনি দৃশ্যমান কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। তার এই সকল অপারগতার করনে অনেক আমলাতান্ত্রিক কর্মকর্তাগণ হয়েছেন বৃহৎ দুর্নীতিবাজ। আর সেবা গ্রহণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। পঞ্চগড়ে'র চা চাষীদের চলমান দুর্দশা নিয়েও তিনি কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। জেলা প্রশাসকের কাছে বার বার আবেদন করেও প্রতিকার না পেয়ে ভুক্তভোগী মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করার সময় বলেন টাকার কাছে তিনি বিক্রি হয়েছেন। যে কারনে আমি একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাই নি। স্থানীয়রা আরো জানান, একজন জেলা প্রশাসক জেলার প্রধান। তিনি সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা থাকলেও তা করেন নি। তিনি জেলার সবার জন্য হলেও বাস্তবে তার কার্যক্রম ছিল রাজনৈতিক দলের নেতার মতো। তার সমালোচিত বক্তব্যগুলো সোস্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল। এতেই বোঝা যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার থেকে জেলা প্রশাসক পদে পদোন্নতি কোন অদৃশ্য শক্তির আশীর্বাদে হয়েছে। আমরা নতুন জেলা প্রশাসকের কাছে অনেক কিছু আশা করি। আমরা আশাবাদী নতুন জেলা প্রশাসক আমাদের সকল সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।