নিজস্ব প্রতিবেদক:-
নরসিংদির পলাশ থানার গৃহবধু ফাতেমাতুজ জোহরা লাবন্য পুলিশ কনস্টেবল স্বামী মোঃ ইস্রাফিল আলম'র বিরুদ্ধে মামলা করে বর্তমানে মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ জুলাই পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি থানার মোঃ রুস্তম আলীর ছেলে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত মোঃ ইসরাফিল মিয়ার (বিপি নং-৯৭১৬১৮৪২৮৫, কনস্টেবল নং- ৬৬৫, বর্তমানে বরগুনা জেলার (বেতাগী থানায় কর্মরত) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে লাবন্যের মাতার ও তার চাচার নিকট থেকে মূল্যবান আসবাবপত্র সহ চাকরির পদোন্নতির কথা বলে নগদ অর্থ আদায় করেন। তদুপরি পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে শারিরীক মানসিক নির্যাতন করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেন। দীর্ঘদিন পিত্রালয়ে অবস্থান করলেও কোন প্রকার ভরণপোষণ প্রদান করা থেকে বিরত থাকেন বলে লাবন্য দাবি করেন। তিনি জানান তার কনস্টেবল স্বামী একাধিক মহিলার সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশর মহাপরিদর্শক, পুলিশ হেড কোয়ার্টার ঢাকা, বরগুনা পুলিশ সুপারের নিকট প্রতিকার চেয়ে একাধিক দরখাস্ত প্রেরণ করেন। কোন প্রকার প্রতিকার না পেলেও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে জানান। সবশেষে নরসিংদী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ থানা আমলী আদালতে সি আর মামলা নং ৩৫৮/২০২৪ তারিখ ১২/০৬/২০২৪ যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা দায়ের করলে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করেন। ওয়ােরন্ট ইস্যু হলেও উক্ত কনস্টেবল গ্রেপ্তার এড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে কিংবা আদালতে হাজির না হয়ে অভিযোগকারিনি লাবণ্যকে বিভিন্ন ধরনের প্রাণনাশের হুমকিসহ মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেন। অভিযোগকারিনি বাসস্থানের আশেপাশে এবং চলাচলের পথে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নজরদারিতে মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অভিযোগকারিনী লাবণ্য উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলকে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।
মামলার বাদীনির স্বামীঃ পুলিশ কনষ্টেবল মোঃ ইসরাফিল এর নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার উক্ত স্ত্রী আমাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো এবং তিনি তার পিত্রালয়ে যেতে চাইলে তার অনুমতি নিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়। তিনি আমার বিরুদ্ধে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিক মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে ডিআইজি বরিশাল কর্তৃক একটি অভিযোগ বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ হালিম মিয়ার নিকট তদন্তাধীন রয়েছে। আরো জানতে পারি আমার নামে নরসিংদির আদালতে একটি যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করায় আদালত আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। নরসিংদি জেলাধীন কর্মরত থাকা কালিন, ঘোড়াশালে মোহাম্মদ শরীফ নামে একজন পান ব্যবসায়ীর নিকট থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন এবং উক্ত এলাকার মোঃ মাকসুদুর রহমান নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে তিনি ৬০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করেন। উক্ত টাকা পরিশোধ না করেই প্রতারণাভাবে আত্মসাত করার উদ্দেশ্যেই বদলি হয়ে অন্য এলাকায় চলে যান। এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান আমার আর্থিক সমস্যার কারনে টাকা পয়সা নিয়েছি আমার হাতে টাকা আসলে উক্ত টাকা পরিশোধ করে দিবো। তার স্ত্রীর নিকট থেকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা চাকুরীর পদোন্নতির জন্য নিয়েছেন বলে স্ত্রীর দাবী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান তাদের কাছ থেকে কোন যৌতুক বা পদোন্নতির জন্য কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয় নাই। সর্বশেষ প্রশ্ন ছিলো- আপনার স্ত্রীর সাথে নিষ্পত্তি হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা? তার জবাবে তিনি বলেন, তার সাথে সমঝোতা করার কোন ইচ্ছাই আমার নাই।
ফাতেমাতুজ জোহরা লাবন্য জানায় যে, পুলিশ কনস্টেবল স্বামী মোঃ ইসরাফিল মিয়ার বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে নিয়মিত হুমকি দিয়েই যাচ্ছেনই।
চোখ রাখুন পর্ব-০৩