শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
অজিত কুমার রায়,খুলনা থেকে,
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১টি পুরাতন ভবন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ আবদুল গনি এবং প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন এর যোগসাজসে নিলাম ছাড়াই বিক্রি করে অর্থ ভাগা ভাগি করে নেওয়া অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও অনেক গুলো বড় বড় মেহগনি ও শিশুগাছ নিলাম ছাড়াই বন বিভাগের অনুমতি ব্যতীত বিক্রি করে তারও অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এঘটনা ধামাচাপা দিতে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারিতে প্রকৌশলী অফিস থেকে নামমাত্র মূল্য দেখানো হয়। প্রকাশ্যে নিলামের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে খানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরাতন ভবন ও গাছ নিলাম করা হয়নি। তবে নিলাম না করালেও সেখানে সেই ভবন এবং গাছ অবশিষ্ট । গোপনে বিক্রি করে সংশ্লিষ্টরা সরকারি টাকা আত্নসাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৭/১২/২০২৩ খ্রিস্টাব্দে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাঃ আবদুল গনি ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বললেও অজ্ঞাত কারনে চিঠি কিংবা জবাবের কোন হদিস মেলেনি। চিঠিতে লেখা ছিলো, “বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, আপনি, আপনার বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবন ও দুইটি শিশুগাছ সরকারি নিয়ম না মেনে বিক্রি করে অর্থ আত্নসাত করেছেন। আপনার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হবে না এই মর্মে সন্তোষ জনক জবাব আগামী ৭ দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষর কারীর দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য বলা হলো।”
এই চিঠি ইস্যু করার পরেও প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন বহাল তবিয়তে আছে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারও এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তিনি কোন রহস্যের কারণে নিশ্চুপ আছেন এটা কারো বোধগম্য নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিজেও এই অনিয়মের সাথে জড়িত হওয়ায় লোক দেখানোর জন্য এ চিঠি করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ আবদুল গনি এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি। এদিকে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলে বেড়াচ্ছেন, ঝিনাইদহ জেলার ডিসি আমার আপন ছোট ভাই। তাকে কেউ ছুতেও পারবে না। তাছাড়াও তার বন্ধুরাও বড় পদে আসীন হওয়ায় তাকে কোন কিছু করার ক্ষমতা সাতক্ষীরার কারো পক্ষে সম্ভব নয়। কয়েক বছর আগে সাতক্ষীরা জেলার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলমসহ (বর্তমানে খুলনা জেলায় কর্মরত)কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জালিয়াতির কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তার একটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন করে শাস্তি প্রদান করা হয়। এখন জাকির হোসেন বলে বেড়াচ্ছেন যে, ভবন ও গাছ বিক্রি করে তো অর্থ আমি একা খায়নি। বড় জোর একটি ইনক্রিমেন্ট কাটা যাবে, তার বেশি কিছুই হবে না। তার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে, সেই কর্তা ব্যক্তি। রায় সে নিজেই লিখবে। এমন ক্ষমতাধর প্রধান শিক্ষককে কি আদৌ আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে, এ ধরনের প্রশ্ন এখন সকল শিক্ষকের মুখে। এ বিষয়ে মোঃ জাকির হোসেন এর মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিছিপ করেননি।