নিজস্ব প্রতিবেদক:-“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্র্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ৩১ অক্টোবর ২০২৩ হতে ০২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ০৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে কতিপয় দুস্কৃতিকারী ফেনী  পৌরসভার ট্রাংক রোডস্থ সেন্ট্রাল হাই স্কুলের সামনে বে-আইনী জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতংক, জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টিসহ রাস্তায় যানবাহন ভাংচুর করতে থাকে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণে গুরুতর আহত ভিকটিম আবুল কালাম আজাদ নামে একজনের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে দুস্কৃতিকারীরা তাদের লক্ষ্য করে রাস্তায় আরো বেশী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনসাধারণ প্রতিবাদ করার চেষ্ঠা করলে দুস্কৃতিকারীরা উত্তেজিত হয়ে ভিকটিম আবুল কালাম আজাদ’কে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মেরে এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে। এছাড়াও দুস্কৃতিকারীদের ককটেল বিস্ফোরণের ফলে ভিকটিমসহ আরো ০৩ জন গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের জানালে তারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসলে দুস্কৃতিকারীরা পুনরায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং ভিকটিমকে সুযোগ পেলে হত্যার হুমকি প্রদান করে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। দুস্কৃতিকারীরা সিএনজি, অটো রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।

উক্ত ঘটনায় ভিকটিম আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে ৩৫ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন’কে আসামি করে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় একটি নাশকতা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৪/৫৯১, তারিখ-০১ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৫/৪২৭/৫০৬/ পেনাল কোড ১৮৬০, তৎসহ ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩/৬ ধারা।

বর্ণিত ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতা ঘটনায় মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত মামলার এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ সংবাদের ভিত্তিতে অদ্য ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ০০১০ ঘটিকায় ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন দাউদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত নাশকতা মামলার ০১নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ফেনী জেলা বিএনপি’র আহব্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার (৫৫), পিতা- নূর আহম্মদ প্রকাশ নুরু মিয়া, সাং- মরুয়ারচর, থানা ও জেলা- ফেনী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, জনসাধারণকে মারধর ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি এবং গাড়ী ভাংচুর করে নাশকতা সৃষ্টি  করেছে বলে স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেফতারকৃত আসামি শেখ ফরিদ বাহার (৫৫) এর বিরুদ্ধে ফেনী জেলার সদর থানায় সরকারী সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, বেআইনি সমাবেশ, নাশকতা, হত্যাচেষ্টাসহ সর্বমোট ১০ টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।