বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন
পারভেজ রানা,বিশেষ প্রতিনিধিঃবরগুনার তালতলীতে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রেঞ্চ মনিরুল ইসলাম ও বিট কর্মকর্তার ফজলুল হকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় ১১টি ভিসিএফ সমিতির হাতে দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও তা বাস্তবে নেই। এই রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতায় মুখ থুবরে পড়েছে সরকারে এই প্রকল্প।
জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে উপজেলার সংরক্ষিত বন এলাকা বড়বগী,সোনাকাটা ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্প দেয় বন বিভাগ। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঘর ভাড়া নিয়ে ঐ তিনটি ইউনিয়নে ১১ টি ভিসিএফ সমিতি করা হয়। সেখানে ঘর ভাড়া মাসে ২৫’শ টাকা চুক্তি হয়। তবে চুক্তি অনুযায়ী ঘর ভাড়ার টাকা দেওয়া হয়নি। এই সমিতিতে সঞ্চয় ও ঋণ পরিচালনা করার জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে এক জন ক্যাশিয়ার (বুক কিপার) নিয়োগ দেওয়া হলেও সেই সম্মানী ভাতার টাকা দেওয়া হয়নি। ঐ এলাকার বন নির্ভরশীল মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রশিক্ষন দেওয়ার কথা থাকলেও নামে মাত্র প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। বনকে সুরক্ষা করার জন্য স্থানীয়দের সম্মানী ভাতার মাধ্যমে প্রহরী নিয়োগ করে থাকলেও তাদের কোনো ধরনের সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়নি। এছাড়া টেকসই বন ও জীবিকা(সুফল) প্রকল্পের ১১টির ভিসিএফ সমিতির অন্যান্য প্রকল্পগুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করছে না তারা। এই সব অভিযোগের উপজেলা রেঞ্চ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ও নিশানবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা একে এম ফজলুল হক।
সংশ্লিষ্ট ভিসিএফ কমিটির সওদাগার পাড়ার সভাপতি মনোয়ার হোসেন মীর,কবিরাজপাড়ার সভাপতি মি.মংথিন জো ও নামেশেপাড়ার সভাপতি মি.মংচিন থান বলেন,রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্নীতি কারণে সরকারের এই প্রকল্পটি মুখ থুবরে পড়েছে। প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী আমাদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও তারা কোনো ক্ষমতাই দেয়নি। সমিতির টাকা ব্যাংক থেকে উঠানোর জন্য চেকে স্বাক্ষর নিয়ে যায়। সেই টাকা কি করে কোথায় খরচ করে তাও আমাদের জানায় না। এর প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের সবাইকে হুমকি দেয়।
কবিরাজপাড়া সমিতির ক্যাশিয়ার(বুক কিপার) রিপা বলেন, আমি বুক কিপার হিসেবে আমি দুই বছর যাবৎ কাজ করে আসছি। গত তিন মাস আগে আমারদের জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা করে সম্মানী দেওয়ার বরাদ্দ হয়। তবে আমাদের তিন মাসের ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৫ হাজার টাকা দিয়ে তিন মাসেইর স্বাক্ষর নিয়ে যায়। তখন বলেন বাকি দুই মাসের টাকা বিভিন্ন অফিস খরচ বলে আমাদের পাঠিয়ে দেয়। ১১টি সমিটির ১১ জন বুক কিপারের টাকাই রেখে দিয়েছেন রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ এই ১১টি সমিটির সকল বুক কিপারের।
এবিষয়ে তালতলী রেঞ্চ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন আমি কিছু জানি না। এটা ঐ সমিতির লোকজনের নামে ব্যাংকে টাকা আসে তারাই ভালো জানে। আমরা শুধু এই প্রকল্পের তরারকি করি।
পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,এবিষয়ে যদি কেউ অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।