মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:-
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ভুক্তভোগী ভিকটিম স্বামী পরিত্যক্তা ভিক্ষুক নারী চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ভিকটিম কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়ন থেকে ভিক্ষা করে ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে আসলে জৈনক মেহরাজ এর সাথে ভুক্তভোগী ভিকটিমের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে মেহরাজ ভিকটিমকে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে এবিএম ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিকদের শোয়ার কক্ষে নিয়ে যায়। অতঃপর কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেহরাজ এবং তার অন্যান্য ৭/৮ জন সহযোগী মিলে পালাক্রামে একাদিকবার জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ধর্ষণকারীরা ভিকটিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাশে রেখে পালিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্যাতিত ভিকটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। উক্ত চাঞ্চল্যকর গণধর্ষনের ঘটনাটি ফেনীসহ সাড়াদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী ভিকটিম বাদী হয়ে ০৮ জন’কে এজাহারনামীয় এবং ০২/০৩ জন’কে অজ্ঞাতনামা করে ফেনী মডেল থানায় একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৯, তারিখ-০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/২০২০) এর ৯(৩)/৩০।
উক্ত অমানবিক, পাশবিক, মস্তিস্ক বিকৃত ও নিকৃষ্ট চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামী সালাউদ্দিন ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপুল এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী সালাউদ্দিন (৩৫), পিতা- মৃত আলী আহম্মদ, সাং- চরজুবলী, থানা- নোয়াখালী সদর, জেলা- নোয়াখালী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী সালাউদ্দিন এর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, গণধর্ষণের মূলহোতা পলাতক আসামী মেহরাজ ফেনী জেলার দাগনভূইয়া থানাধীন ধীলপুর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গণধর্ষণ মামার মূলহোতা মোঃ মেহরাজ (৩৫), পিতা- মৃত রুহুল আমিন, সাং- ইউনুছপুর ফকিন্নিপাড়া, থানা- হাতিয়া, জেলা- নোয়াখালী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামী এবং তারা পরস্পর যোগসাজশে বর্ণিত ভিক্ষুক নারী’কে আর্থিক সহায়তার কথা বলে এবিএম ব্রিক ফিল্ডে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে বলে স্বীকার করে এবং উক্ত ঘটনার পর হতেই তার ছদ্মবেশ ধারণ করে ফেনী জেলার বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে করে মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।