নিজস্ব প্রতিবেদক:- সৎ, দক্ষ, পরিশ্রমী তিন জন সাংবাদিক বন্ধু, ছোট ভাই দৈব বিপাকে পড়ে এশিয়ান টিভিতে দায়িত্বরত আছে... এ কারণে গণমাধ্যম নামে বেশ্যাবৃত্তি নিয়ে হাত খুলে কিছু লিখতে পারি না। তা না হলে লিখতাম, এশিয়ান টিভি’র সংঘবদ্ধ চক্রের আরেক গ্যাং অপরাধী আজ গ্রেফতার হয়েছে। টিভির রিপোর্টিং এসাইনমেন্টের কথা বলে মাদারীপুরের এক নারী সাংবাদিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল কথিত সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম খান (৩৬)। তার বাবার নাম সিরাজ খান, মাতা: মোসাম্মৎ সাহেরা বেগম, বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন যোদ্ধা করিসিং গ্রামে। বর্তমানে সিঙ্গাইর থানার (মানিকগঞ্জ) ধল্লী ইউনিয়নের পূর্ব রাস্তার ৩৩০ নম্বরস্থ শাহীনের বাসায় ভাড়া থাকে। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে ছিল রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ইসলাম চৌধুরী (৩৮), তার বিস্তারিত ঠিকানা এখনো পাওয়া যায়নি।
সাইফুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে এ সাংবাদিক টিম এক দিন এক রাত মাদারীপুরে অবস্থান নিয়ে অজ্ঞাত কী সব কাজে ছোটাছুটি করে ঢাকায় ফিরে আসে। তবে আসার সময় আশ্রয় নেয়া নারী সাংবাদিকের ল্যাপটপ থেকে তাদের স্বামী স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি, ভিডিও চুরি করে আনে তারা। ঢাকায় ফিরেই নারী সাংবাদিকটির বিভিন্ন ছবির নিচের অংশে নানা নগ্ন দৃশ্য সংযোজন করে তা পাঠিয়ে দেয় তার স্বামীর ইনবক্সে। এরপর সাইফুল ইসলাম তার ব্যবহৃত ০১৭১৬২৩৫২৬৩ নাম্বার থেকে ওই সাংবাদিক দম্পত্তিকে নানারকম ভয়ভীতি দেখায় এবং নারী সাংবাদিককে অশালীন নানা প্রস্তাব দিতে থাকে। একপর্যায়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধ না করলে নগ্ন দৃশ্যাবলী অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয় কুলাঙ্গার সাইফুল। মানসিক চাপ ও ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু নগ্ন ছবি ওই সাংবাদিক দম্পত্তির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশী ঘনিষ্ঠজনদের কাছে পাঠিয়েও দেয়।
অনৈতিক অযৌক্তিক দাবি পূরণে ব্যর্থ দম্পত্তিকে দিন রাত ০১৮৪৫৯১২৯৭৬, ০১৭১৭৪৩৭৯৩৫ (বিকাশ), ০১৯১১১১২৪৩৭, ০১৮৮৬৪৪৯৫৬৩, ০১৭১২৬২৯২৫৫, ০১৮১৪১১৭৭৯৭ ইত্যাদি মোবাইল নাম্বার থেকে অব্যাহত জুলুমবাজি চালাতে থাকে। একপর্যায়ে নিজস্ব ফেইসবুক টাইমলাইনে এবং দুটি নামসর্বস্ব অনলাইন পোর্টালে নারী সাংবাদিকের ছবি যুক্ত করে সংবাদ প্রকাশের নামে নগ্নতার কল্পকাহিনী ছড়িয়ে দেয় কুলাঙ্গার সাইফুল। উপায়ন্তরহীন অবস্থায় ভুক্তভোগী দম্পত্তি মাদারীপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। মাদারীপুর মডেল থানার পুলিশ তৎক্ষনাত অভিযানে নামে এবং ঢাকা, সিঙ্গাইরসহ বিভিন্ন স্থানে টানা ১০ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে কথিত এশিয়ান টিভির সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তারা উভয়েই এ ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। তাছাড়া তাদেরকে রাস্তায় ছেড়ে দেয়ার জন্য মোটা অঙ্কের ঘুষ প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু কোন কিছুতেই পুলিশকে টলাতে না পেরে সাইফুল কুলাঙ্গার ও তার সহযোগী আটকে পড়ে থানা হাজতে। আজ রোববার তাদেরকে মাদারীপুর মডেল থানায় নেয়া হলে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা থানায় জড়ো হয় এবং কুলাঙ্গার সাইফুলকে লক্ষ্য করে জুতা, স্যান্ডেল ও থুথু নিক্ষেপ করে ঘৃণা প্রকাশ করে। সবশেষে এ তথ্য প্রকাশকালে জানা যায়, মডেল থানা পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছে।