1. admin@dailyoporadhonusondhanltd.net : admin :
শিরোনামঃ
বটিয়াঘাটা সরস্বতী মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠে সিরাতুন্নবী ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জে স্কুল মাঠে গরু ছাগলের হাট ডিবির অভিযানে তালতলীতে ১৮০ ইয়াবা সহ আটক ১ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ রথিন বিশ্বাসের পরিবারের পাশে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কোটালীপাড়ায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব-১১ এর যৌথ আভিযানে ০৪ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরতদের উপর গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি সুলাইমান বাদশা আটক। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’র অভিযানে অপহৃত সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কর্মচারীকে জীবিত উদ্ধার এবং অপহরণের মূলহোতা ও অটোরিক্সা জব্দ সহ অপহরণকারী গ্রেফতার-০৭ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’র অভিযানে ধর্ষণের চেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি মামলার মূলহোতা সহ গ্রেফতার-০৩ বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয় বরগুনা জেলার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগদান। চট্টগ্রাম সি ই পি জেড এ কর্মরত তহমিনা নামের এক গার্মেন্টস কর্মী নিখোঁজ

র‍্যাব-৭’র অভিযানে বরগুনার পাথরঘাটার গভীর বঙ্গোপসাগরের জেলে নিখোঁজের ঘটনার সংশ্লিষ্টতায় বোট জব্দ ও ০৪ জন কুখ্যাত জলদস্যু, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ আটক-০৪

  • আপডেট সময়ঃ বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৬৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:- “বাংলাদেশ আমার অহংকারচ্ এই স্লোগান নিয়ে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‍্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বরগুনা জেলা মৎস্যজীবীর ১৮ জন জেলে একটি ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে ঐদিন দিবাগত রাতে পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ২৫-৩০ জনের একটি জলদস্যুবাহী দ্রুতগামী ট্রলার উক্ত ট্রলারের পিছনে ধাক্কা দেয় ও ফাঁকা গুলি করে। তখন ট্রলারে থাকা জেলেরা চিৎকার করলে জলদস্যুরা ট্রলারে উঠে ট্রলারের থাকা ১৮ জন জেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। জলদস্যুদের কবল থেকে বাঁচতে ৯ জন জেলে গভীর সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন। অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা জলদস্যুদের হামলায় আহত ৯ জন জেলেকে উদ্ধার করে শনিবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটায় নিয়ে আসে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজনথকে শনিবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বাকিদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সোমবার জলদস্যুদের কবল থেকে বাঁচতে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ বরগুনার ৯ জন জেলের মধ্যে ৪ জনকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয় এবং দুপুরে তাদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একজনের মৃত্যূ হয়। অদ্যবধি ০৫ জন জেলে নিখেঁাজ রয়েছে। উল্লেখিত ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক চা ল্য ও আলোড়ন সৃষ্টি করে।

উপরে উল্লেখিত নির্মম ঘটনার সাথে জড়িত জলদস্যু ও ডাকাত দলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‍্যাব-৭, র‍্যাব-৮, র‍্যাব-১৫ এবং র‍্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে একটি বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, বোটে দস্যুতার সাথে সম্পর্কিত একটি ডাকাত দল চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত হতেই র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার

একটি যৌথ আভিযানিক দল বাশখালী উপজেলার গন্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার, শৈলকুপা সহ তৎসংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জলদস্যুতার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত আসামী ১। মোঃ কাইছার @কালু (২৫), পিতাঃ আলী আহম্মেদ, গ্রামঃ পশ্চিম বড়ঘোনা, থানাঃ বাশখালি, জেলাঃ চট্টগ্রাম, ২। মোঃ জাহিদ (২৫), পিতাঃ মৃত আহম্মেদ সাবা, গ্রামঃ পুর্ব বড়ঘোনা, থানাঃ বাশখালি, জেলাঃ চট্রগ্রাম, ৩। মোঃ সেলিম (৪০), পিতাঃ মৃত আলী চান, গ্রামঃ পশ্চিম বড়ঘোনা, থানাঃ বাশখালি, জেলাঃ চট্টগ্রাম এবং ০৪। মোঃ ইকবাল হোসেন (১৫), পিতা- মোঃ সেলিম, সাং- পশ্চিম বড় ঘোনা, থানা- বঁাশখালী, জেলা- চট্টগ্রামথদের আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃত আসামী মোঃ কাইছার @কালু এর কাছ থেকে বরগুনার বোট হতে ডাকাতিকৃত ১টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। পরবর্তীতে উক্ত মোবাইল ফোনটি তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায় উদ্ধারকৃত মোবাইলটি আব্দুল করিম নামক দস্যুতার কবলে পরা ভিকটিম জেলের। আটককৃত আসামীগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায় দস্যুতার সময় কালু এবং জাহিদ সরাসরি বোটে উপস্থিত থেকে দস্যুতায়

অংশগ্রহণ করে এবং আটককৃত সেলিম @ডাকাত সেলিম যিনি ডাকাত দলের বোটের মালিক এবং তার বোট ব্যবহার করেই ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা আনুমানিক ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে বোট নিয়ে সমুদ্রে গমণ করে এবং কক্সবাজার কুতুবদিয়া চ্যানেল এলাকায় ০১ টি ডাকাতি সংঘটিত করে এবং পরবর্তীতে পুনরায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে বরগুনা- পটুয়াখালি চ্যানেলের দিকে গমন করে ২য় ডাকাতিটি সংঘটিত করে। আটককৃত আসামীগণকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জলদস্যুতার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে

 

এবং আসামীগণের নিজহাতে দেখিয়ে দেওয়া স্থান হতে ০৪টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, ০২টি হাতুড়ি, ০৩টি দা, ০১ টি কিরিচ, ০২টি শাবল, জাল এবং দস্যুতাবৃত্তিতে ব্যবহৃত বোট ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত দস্যুদের জিজ্ঞাসাবাদের নিম্নবর্ণিত তথ্যাবলী পাওয়া যায়ঃ

ক।গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের উক্ত ডাকাত দলের নেতৃত্বদানকারী এবং ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত জলদস্যুদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। মূল পরিকল্পনাকারী বিভিন্ন জায়গা হতে জনবল সংগ্রহ করা, কিভাবে ডাকাতি করবে, কোথা হতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আসবে এবং ডাকাতির মালামাল কোথায়া বিক্রয় করা হবে এ সকল বিষয় সে নিয়ন্ত্রণ করত। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে আরেকজন মাঝি কাজ করত। তারা সর্বমোট ১৮ থেকে ২০জন ছিল। তাদের মধ্যে ০৪ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে এবং অবশিষ্ঠদের গ্রেফতারের জন্য র‍্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

 

খ। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ কাইছার @কালু (২৫) এবং মোঃ জাহিদ (২৫) দস্যুতাবৃত্তিতে ব্যবহৃত বোটের সহকারী হিসেবে থাকে এবং ডাকাতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। তারা দুজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে জেলেদেরকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছিল।

 

গ।গ্রেফতারকৃত আসামী সেলিম @ডাকাত সেলিম (৪০) দস্যুতায় সম্পৃক্ত  বোটের মালিক। সে সরাসরি বোটে হাজির না থাকলেও ডাকাতির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সে বোট প্রদান করে। আটককৃত ০৪নং আসামী মোঃ ইকবাল (১৫) সেলিম @ডাকাত সেলিম এর ছেলে এবং ডাকাতির ঘটনার দিন রাতে জলদস্যুদের বোটে অবস্থান করছিল।

 

ঘ।গ্রেফতারকৃত জাহিদ (২৫) @ ডাকাত জাহিদ ডাকাতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। জাহিদ ইতোপূর্বে অন্যান্য বোটে ডাকাতি করেছে বলে জানায়।

 

ঙ।গ্রেফতারকৃত মোঃ ইকবাল হোসেন (১৫) বোট মালিক সেলিম @ ডাকাত সেলিম এর ছেলে এবং বোটের নিয়ন্ত্রণ এবং তত্তবধানের জন্য ডাকাত দলের বোটের সাথে গমন করে। মূলতঃ অস্ত্রসমূহ, বোট পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব গ্রেফতারকৃত ইকবাল পালন করে থাকে।

 

গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ কাইছার @কালু (২৫) এর ভাষ্যমতে তারা গত এক মাসে দুটি ডাকাতি করেছে। এছাড়াও পূর্বের অনেক ডাকাতির সাথে তারা সম্পৃক্ত ছিল। ডাকাতি শেষে তারা কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া, খুরুশখালী ফিশারীঘাটে ডাকাতির সরঞ্জামাদি নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন আড়তদারদের নিকট বিক্রয় করত।

 

গ্রেফতারকৃত জলদস্যূদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পূর্বে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, পেকুয়া, মগনামা, এবং কুতুবদিয়া এলাকার উপকূলীয় অ লে ডাকাতি করত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অধিক তৎপরতার কারনে তারা বর্তমানে এই এলাকা ছেড়ে বরিশাল, বরগুনা এবং খুলনা উপকূলীয় অ লে অবস্থান করে ডাকাতি কার্যক্রম শুরু করেছে। আরো জানা যায় যে, তারা বরিশাল, বরগুনা এবং খুলনা উপকূলীয় অ লে ডাকাতি করে উক্ত ডাকাতির মালামাল কক্সবাজার নিয়ে বিক্রয় করত বলে নিজ মুখে স্বীকার করে। এছাড়াও তাদেরকে উপরে উল্লেখিত ডাকাতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ১৮ জন জেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম, ৯ জন জেলে নিখোঁজ এবং প্রায় ২০ লাখ টাকার রসদ সামগ্রী লুটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো বলে অকপটে স্বীকার করে।

 

উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত ০১নং আসামী মোঃ কাইছার @কালু (২৫) এর নামে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানায় ০২টি চুরির মামলা রয়েছে যে মামলায় সে অভিযুক্ত। এছাড়া ধৃত আসামী মোঃ সেলিম (৪০) এর নামে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানায় ০৫টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ০১ টি অবৈধ অস্ত্র আইনে মামলা এবং বাকি ০৪টি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মামলা পাওয়া যায়।

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

শেয়ার করুন

আরো দেখুন......