মহিদুল ইসলাম (শাহীন) খুলনা, পূর্ব ঘোষিত দিনের দুইদিন পিঁছিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারী শুরু হতে যাচ্ছে খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। হাতে রয়েছে সময় মাত্র এক সপ্তাহ। বরাবরই আওয়ামীলীগের সম্মেলন ঘিরে উত্তাপ ছড়ায়। সেই সাথে তৈরি হয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাস। তবে গতানুগতিক ধারায় সম্মেলন হবে নাকি পুরাতন - নতুন, ত্যাগী গ্রহণযোগ্য কর্মী ও সমর্থক সবার মধ্যেই সম্মেলনে প্রত্যাশা পুরণ হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আশা- হতাশা। যে কোন সম্মলন মানেই নেতৃত্ব সৃষ্টি করা,নিচ থেকে নেতা তুলে আনা,সংগঠনে উদ্যম ফিরিয়ে আনা,নতুন দিক- নির্দেশনা ও নতুন কর্ম- পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলা। তাই অধিকাংশ নেতা-কর্মী সমর্থকেরা মনে করেন এবারে নিয়ম রক্ষার সম্মেলন না হয়ে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে সম্মেলনে গুণগত পরিবর্তন আসবে। নেতৃত্ব নির্বাচন ও আন্দোলন দুটোই মোকাবিলা করতে হবে এমনি দক্ষ ও বিচক্ষণতা দুটোই প্রয়োজন দেখা মিলবে এ সম্মেলনে এমনি আশায় নেতা-কর্মীদের মাঝে নব উচ্ছ্বাসে উদ্ভাসিত হতে দেখা যাচ্ছে। ইতিপূর্বে ২০ ফেব্রুয়ারী এ উপজেলায় সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলো জেলা আওয়ামীলীগ। জাতীয় কর্মসূচী একুশে ফেব্রুয়ারী পড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করে দীর্ঘ ৮ বছর ১৯ দিন পর আগামী ২২ ফেব্রুয়ারী সম্মেলনের তারিখ পুন নির্ধারন করা হয়েছে। প্রতীক্ষিত সম্মেলন ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রত্যাশী ও অনুসারীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে প্যানা ও ফেষ্টুনে ছেঁয়ে ফেলেছে। বটিয়াঘাটা উপজেলা বরাবরই আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে আগামীদিনের নেতৃত্বে কারা আসছেন এমন আলোচনা ও সরব সবখানেই। তবে নতুন কমিটি ভোটের মাধ্যমে হবে নাকি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে চান এমনি নেতা- কর্মীদের মধ্যে এ পর্যন্ত রয়েছেন সভাপতি পদে ২ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৭ জন। সভাপতি পদে প্রার্থী হলেন জলমা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী মোল্যা মিজানুর রহমান বাবু এবং বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো ঃ আশরাফুল আলম খান । আপাতত দুইজন প্রত্যাশীর নাম জোরে সোরে উঠে আসলেও সম্মেলনের দিন পর্যন্ত আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ৭ জনের মধ্যে জোরে সোরে শোনা যাচ্ছে বটিয়াঘাটা সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পল্লব বিশ্বাস রিটু,জলমা ইউপি চেয়ারম্যান ও জলমা ইউনিয়ন আ'লীগের সহ- সভাপতি বিধান চন্দ্র রায়, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা রবীন্দ্রনাথ দত্ত,জেলা আওয়ামী যুবলীগের সদ্য বিদায়ী যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক শেখ রাসেল কবির,সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সি: সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী মানস পাল, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক, সাবেক ভিপি, হোঁগলবুনিয়া স্কুলের সভাপতি, অনুপম বিশ্বাস এবং বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার হালদার। এপদেও শেষ দিন পর্যন্ত আরও প্রত্যাশী বাড়বে বলে ধারণা করছে দলীয় নেতাকর্মীরা। সম্মেলন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন তদবিরের দৌঁড়-ঝাপে ব্যস্ত আছেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবি এম মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় সদস্য এস,এম এ কামাল হোসেন,কেন্দ্র আ'লীগ সদস্য এ্যাডঃ গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার এমপিসহ জেলা ও স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্হানীয় একাধিক আ'লীগ নেতৃবৃন্দ ও কাউন্সিলা জানান, গত আট বছরে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আ'লীগকে যেভাবে সুন্দর করে সাজিয়েছে তাতে বর্তমান সভাপতি আশরাফুল আলম খান ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দিলীপ হালদার এর কোন বিকল্প নেই। তাছাড়া তারা সত্যি সত্যি দলের জন্য নিবেদিত প্রান এবং কর্মী বান্ধব নেতা বটে। উল্লেখ্য বিগত ২০১৫ সালের ৩ রা ফেব্রুয়ারী বটিয়াঘাটা বাজার চত্বরে সর্বশেষ আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আর কোন সম্মেলন হয়নি। দীর্ঘ প্রায় আট বছরের মাথায় জেলা আ'লীগ আকষ্মিক এ উপজেলার সম্মেলনের ঘোষণা দিলে পুরাতন, ত্যাগী,পরিক্ষিত, দলের জন্য নিবেদিত দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসাহ ও উদ্দীপনা বইতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারীর দ্বিতীয় অধিবেশনে কার কার নাম উঠে আসবে কে পাচ্ছেন গুরুদায়িত্ব তা শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।