বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন
রিপোর্টঃ মোঃ ওবায়েদুর রহমান সাইদ শরীয়তপুর প্রতিনিধি।শরীয়তপুর সদর উপজেলায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পে এক ইউ’পি মেম্বারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদরের আংগারিয়া ইউ’পি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও ইউ’পি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের মোল্যা ছেলে আলীমুল মোল্যা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছেন। ওই হামলার সময় তিন সাংবাদিকের মাইক্রোফোন,ক্যামেরা, মটর সাইকেলের লুকিংগ্লাস ও হেলমেট ভাংচুর করা হয়েছে। কালেরকন্ঠের প্রতিনিধি শরীফুল আলম ইমনসহ ৫ সাংবাদিককে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়েছে
সাংবাদিকরা জানান,কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে ইউ’পি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের অনিয়মের বিষয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে চাওয়ায় শরীয়তপুরের কর্মরত ৫ সাংবাদিক রোববার দুপুরে আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। তার কাছে ঘটনাটির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পরেন। তখন তাদের ওপর হামলা করেন ইউ’পি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আলীমুল হক মোল্যা। তারা এখন টেলি়ভিশন ও চ্যানেল টুয়ান্টিফোরের মাইক্রোফোন আছার মারেন,ক্যামেরা ফেলে দেন। এ সময় প্রথম আলোর মটরসাইকেলের লুকিংগ্লাস ও হেলমেট ভেঙ্গে ফেলেন। ওই দুই ব্যক্তি সাংবাদিকদের গালাগালি দিয়ে জীবন নাশের হুমকী ও চাঁদাবাজি মামলায় জরানের ভয় দেখান।
এখন টেলি়ভিশনের সাংবাদিক কাজী মনিরুজ্জামান বলেন,দরিদ্র মানুষের জন্য বাস্তবায়ন করা প্রকল্পে ইউ’পি চেয়ারম্যান ও সদস্যর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনা নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করি। বিষযটির বক্তব্য জানতে গেলে চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হন। পরিষদের একটি কক্ষে আমাদের আটকে হেনস্তা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব।শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়,গ্রামের দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তারই একটি ‘অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি’প্রকল্প। ওই প্রকল্পের আওতায় বছরে দুই দফা ৪০ দিন করে দরিদ্র মানুষ কাজ করার সুযোগ পান। প্রকল্পের শ্রমিকরা মাটি কাটা,রাস্তার ঘাস পরিস্কার, ডোবার কচুরিপানা পরিস্কারসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এ কাজের জন্য শ্রমিকদের প্রতি দিন ৪০০ টাকা মুজরী দেয়া হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তালিক প্রস্তুত করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়। ওই তালিকা যাছাই-বাছাই শেষ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রনালয় থেকে ওই শ্রমিকদের বিকাশ নম্বরে কাজের টাকা পরিশোধ করা হয়।নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি’র কাজ শুরু হয়েছে। আংগারিয়া ইউনিয়নে ৬৮ শ্রমিকের অনুকুলে ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ২ নম্বর ওযার্ডের চরচটাং গ্রামে ১৪ জন শ্রমিক দিয়ে একটি মাটির রাস্তা সংস্কার চলছে। ওই প্রকল্পের সভাপতি করা হয়েছে ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোল্যা।
ওই ১৪ জন শ্রমিকের নামের তালিকায় ইউ’পি সদস্যর স্ত্রী নাছিমা বেগম, ছেলে আলীমুল হক মোল্যা,মেয়ে সোনিয়া বেগম,ছেলের স্ত্রী হালিমা আক্তার,ভাই আবু সিদ্দিক মোল্য,ছেলের শাশুরী,শ্যালিকাসহ ১১ জনের নাম রয়েছে। তাদের নামের বিকাশ নম্বরে শ্রমিকের মুজরী দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ইউ’পি সদস্যর পরিবারের কেউ মাটি কাটা শ্রমিকের কাজ করেন না।
২০২১-২০২২ অর্থ বছরে চরচটাং গ্রামে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে ২০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। ইউ’পি সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোল্যা, তার পরিবারের সদস্যদের নামের তালিকার বিকাশ নস্বর দিয়ে ওই টাকা উত্তোলন করেছেন। সেই প্রকল্পে ৩০ হাজার টাকা ব্যায়ে একটি ধান ক্ষেতে ৫০ মিটার রাস্তা সংস্কার করে বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
নতুন প্রকল্পে কাজকরা শ্রমিক ইকবাল হোসেন বলেন,আমারা ৭ জন শ্রমিক ৬ দিন কাজ করে একটি রাস্তা সংস্কার করেছি। আরেকটি রাস্তার ৯০ মিটার সংস্কার করছি। ওই দুটি রাস্তায় আমাদের ৮০ হাজার টাকা বিল দেয়া হবে । ইউ’পি মেম্বারের ছেলে আলীমুল চুক্তি অনুযায়ী আমাদের টাকা দিচ্ছেন।
ইউ’পি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলেন। এ ছাড়া কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন,অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান প্রকল্পে কোন অবস্থায় এক পরিবারের একাধিক ব্যক্তির নাম থাকা যাবে না। এক্ষেত্রে ইউপি মেম্বারের কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন,এক ইউপি চেয়ারম্যান কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা করেছেন এমন তথ্য পেয়েছি। তারা লিখি