মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
হোসেন বাবলা:: ২৬অক্টোবর,বুধবার নগরীর ইপিজেড- পতেঙ্গা থানাধীন দক্ষিণ হালিশহরের আকমল আলী রোডে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে জেলে পরিবারে ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে উপকূলীয় বাসিন্দারা।
গতকাল ২৫অক্টোবর ও আজ বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরজমিনে দেখা যায় শুধু বিধস্ত ঘরবাড়ির চিত্র।কেউ কেউ কান্নায় আহাজারি করছেন আর বলছেন কষ্টের কথা। সিত্রাং ঝড়ে শতাধিক ঘর-বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। এতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন শতাধিক পরিবার।
ক্ষতিগ্রস্ত মিলনী দাশ বলেন, ঐদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে পানি আসতে শুরু আর ৯টায় সব শেষ। এখনো বেশিরভাগ ঘর পানির ওপর ভাসছে। ঝড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। ঘরে খাবার নাই, থাকার জায়গা নাই। দুঃখের কথা বলছিলেন জেলে আকাশ দাশও।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে ঝড় শুরু হয়। এরপর পানি বাড়তে থাকে। ঝড়ের কবলে পড়ে সবকিছু উড়ে গেছে। টাকা-পয়সা সবকিছু ভেসে গেছে। ছেলেমেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি। কিভাবে চলবো, আমাদের ৯-১০ জনের সংসার।
ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে জেলে পাড়ায় এখনো পর্যন্ত কোন সহায়তা পায়নি তারা। পতেঙ্গা -ইপিজেড সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, জেলে পল্লির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের ৬৬ ইউনিয়নের ৫ হাজার ৮৫৪ ঘর। এর মধ্যে আংশিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭৬০টি এবং সম্পূর্ণ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৯৪টি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মোট ৬৬টি ইউনিয়নের ৫৮ হাজার ৫৭২ জন মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়ে। এছাড়া দুর্গতদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ বেশ কয়েকটি পরিবার অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সিডিএর খোলামাঠে ইচ্ছা মাফিক বাশঁ-খুটি দিয়ে দখল নিয়ে বসবাস করার জন্য ঘর-আবাসস্থল তৈরির উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে।
তবে চসিক ও সিডিএ সূত্রে এই বিষয়ে কেউ কিছু জানানি বলে প্রাথমিক ভাবে জানায়। অনেক জেলে পরিবার অধিকার নিয়ে ঘর তৈরি করছেন বলে ভুক্তভোগিরা বলছেন।