বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:১৩ অপরাহ্ন
টি আই, মাহামুদ,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি।তিন পার্বত্য জেলায় সরকারি আদেশ অমান্য করে পরিচালিত ইটভাটা গুলোতে জ্বালানির যোগান দিতে পরিবেশ ধ্বংস করে উজাড় করা হচ্ছে বনের গাছপালা।
তিন পার্বত্য জেলায় ইটভাটা তৈরীর সরকারি আদেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও প্রস্তুত ভাটাগুলো। বান্দরবান জেলার অন্নান্য উপজেলার মধ্যে লামা উপজেলা অন্যতম, জেলায় অবস্থিত ৬৪টি ইটভাটার মধ্যে ২৮টি রয়েছে লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে। আলীকদম উপজেলায় ৩টি, যেগুলোর জ্বালানির যোগানে প্রয়োজন হয় লক্ষ লক্ষ ঘনফুট কাঠ। আর এই জ্বালানি সংগ্রহের জন্য উজাড় করা হচ্ছে শত শত বনাঞ্চল।এতে পরিবেশের ভারসাম্য হারানোর পাশাপাশি বাড়ছে রোগ বালাইয়ের শংকা।
আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত ৩টি ইটভাটায় চাহিদার পরিমান জ্বালানি সংগ্রহে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ীরা। উপজেলা সদরের দশ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত সকল বনাঞ্চল ইতিপূর্বেই সাবাড় হয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে দেশের ইটভাটা গুলোর জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে যেভাবে গাছ কেটে বনাঞ্চল ধ্বংস করা হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি ভুগতে হবে অক্সিজেন সংকটে, খুঁজে পাওয়া যাবে না আসবাবপত্রের কাঠ। কারন যেভাবে বনের গাছ কাটা হচ্ছে, তার ৫ ভাগও নতুন বনাঞ্চল সৃষ্টি হচ্ছে না।
অচিরেই সরকারের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে এই অঞ্চলে মানব বসতিগুলো হুমকির মুখে পড়বে।
ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বর্জ্যে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। এতে ভাটার আশপাশের গ্রামীণ জনপদের জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, ইটভাটায় সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশেষ করে কৃষিজমি এবং কাঠের ব্যবহার ও তার ফলে উৎপাদিত কালো ধোঁয়া সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ। পার্বত্যঞ্চলে ইটভাটা তৈরির অনুমতি না থাকলেও ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বেশির ভাগ ভাটাই স্থাপন করা হয়েছে লোকালয় তথা মানুষের বসতবাড়ি ১ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।