রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
টি আই, মাহামুদ,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি। গৌতম বুদ্ধের বিভিন্ন জাতক কাহিনি ও লোক কাহিনি নিয়ে গীতিনাট্যের মাধ্যমে যাত্রার আদলে উপস্থাপন করাকে মারমা ভাষায় ‘পাঙ্খুং’ বলা হয়।
পার্বত্যাঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় মারমা লোকনাট্য ‘পাঙ্খুং’কে পুনর্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট (কেএসআই)। বিভিন্ন এলাকার এসব পাঙ্খুং দলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মঞ্চায়ন করানো হচ্ছে নব উদ্যমে। গৌতম বুদ্ধের বিভিন্ন জাতক কাহিনি ও লোক কাহিনি নিয়ে গীতিনাট্যের মাধ্যমে যাত্রার আদলে উপস্থাপন করাকে মারমা ভাষায় ‘পাঙ্খুং’ বলা হয়।
পাঙ্খুর বৈশিষ্ট্য হল শুধু অভিনয় জানলে হবে না, নিজের গলায় ভাল করে গাইতে জানতে হবে। সব সংলাপ হবে গানের ভাষায়। যার কারনে পাঙ্খুর নাম গীতিনাট্য। একসময় তিন পার্বত্য জেলায় মারমাদের বিভিন্ন পাড়ায় এরকম পাঙ্খুং নাট্যদল ছিলো। কিন্তু দল পরিচালনা, আর্থিক ও শিল্পী সংকটে পড়ে অনেক পাঙ্খুং দল বিলুপ্ত হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রয়াত শিক্ষক অধ্যাপক আফসার আহমদ মারমাদের পাঙ্খুং ও পাঙ্খুং নাট্যদল নিয়ে গবেষনা করেছিলেন। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মনহরি পাঙ্খুং’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০২১ সালে ৯ অক্টোবর হঠাৎ করে অধ্যাপক আফসার আহম্মদ মারা যাওয়ায় গবেষণার কাজ আর এগোয়নি।
এখনও পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে মেলার অনুষ্ঠান আয়োজন করার চল রয়েছে পাহাড়ে। সেখানে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পাঙ্খুং নাট্যদল যাত্রার আদলে মারমা ভাষায় জাতক ও লোককাহিনি মঞ্চায়ন করে থাকে। সেই পাঙ্খুং অনুষ্ঠান উপভোগ করতে এখনও হাজার মানুষের জমায়েত হয় এসব মেলায়।
কেএসআই’র উদ্যোগে পাঙ্খুং দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে আবারও হয়তো ফিরবে শীতের রাতে ঠান্ডা উপেক্ষা করে পাঙ্খুং উপভোগ করার সুবর্ণ দিন।
(তথ্য ও ছবি সংগৃহীত)