রিপোর্টঃ মোঃ ওবায়েদুর রহমান সাইদ শরীয়তপুর প্রতিনিধি। শরীয়তপুর পদ্মা নদীতে মা ইলিশ ধরা বন্ধে জাজিরার নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলাম সোহেল এক ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে এ ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্যোগ চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বিলাসপুর, জাজিরা, পালেরচর, বড়কান্দি এবং পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পদ্মানদী। বছরের পর বছর ধরে এই পদ্মানদীতে ইলিশ মাছসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখানকার কয়েক’শ জেলে পরিবার।মা ইলিশের প্রজনন সময় হিসেবে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই ২২ দিন পদ্মানদীতে সকল প্রকার মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে সরকার। এই ২২ দিন যাতে জেলেরা পদ্মানদীতে মাছ শিকার করতে না যান সেজন্য জাজিরার ইউএনও কামরুল ইসলাম সোহেল এক ব্যাতিক্রমধর্মী সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। সেই আয়োজনের মধ্যে থাকছে কাবাডি খেলা এবং বাউল গানের অনুষ্ঠান।

জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বিলাসপুর, জাজিরা, পালেরচর, বড়কান্দি এবং পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় এবং জাজিরা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তরের আয়োজনে ধারাবাহিক ভাবে একেকদিন একেকটি ইউনিয়নে অবস্থিত পদ্মা পাড়ের ঘাট গুলোতে বিকেলে জেলেদের মাঝে কাবাডি খেলা হবে। পরে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলবে স্থানীয় বাউলদের নিয়ে বাউল গানের আসর। সেই বাউল গানকে সৌন্দর্য মন্ডিত করতে সবজি খিচুরি দিয়ে জেলেদেরকে আপ্যায়িত করা হবে। যাতে জেলেরা রাতে পদ্মানদীতে মাছ শিকার করতে না যান। ইউএনও’র এ অভিনব আয়োজনে অনেক খুশি হয়েছেন স্থানীয় জেলেরা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় জেলে মোঃ কাওসার মিয়া বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এই বিনোদনমূলক আয়োজনকে মন থেকে উপভোগ করছি এবং মা ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকছি। তাছাড়া অন্যদেরকেও মা ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি।কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার হোসেন বেপারী বলেন, ইউএনও সাহেব যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। আমরা তার এই উদ্যোগের সাথে একাত্ত্বতা ঘোষণা করেছি। ইলিশ সংরক্ষণে ভুমিকা রাখতে পেরে আমরাও আনন্দিত।

জাজিরার মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাড়ির পরিদর্শক মোঃ জহিরুল হক বলেন, আমরা প্রতি বছরই বিভিন্ন জায়গায় মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান পরিচালনা করি। যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তবে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন আয়োজনে কষ্টের পরিবর্তে আনন্দ লাগছে। আমি ও আমার টিমের সবাই এই অভিযানকে উপভোগ করছি।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম সোহেল বলেন, একটানা ২২ দিন জেলেরা ইলিশ মাছ ধরতে না পারায় তাদের মন অনেকটা খারাপ। তাদের মন খুশিতে রাখতে এবং অভিযানে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের একঘেয়েমি কাটাতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আশা করছি, একটু হলেও জেলেদের মনের কষ্ট দূর করতে সক্ষম হবো