রাজশাহী ব্যুরো :- রাজশাহী-১ আসনের (তানোর-গোদাগাড়ী) এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন ফ্লাটের সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি সভায় উপস্থিত না হওয়ায় ৭ জনের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও ফ্লাটগুলো এমপির নিকট থেকে কিনে নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁদের ফ্লাটের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এমপির কর্মচারীরা। অথচ নর্দান পাওয়ার সাপ্লাই কম্পানীতে (নেসকো) নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেও আসছেন তাঁরা। কিন্তু শুধুমাত্র সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি সভায় উপস্থিত হতে না পারায় নেসকোর অনুমতি ছাড়ায় বাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন এমপির লোকজন। যেটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলেও দাবি করেছেন নেসকোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
আব্দুল আলীম নামের এক ফ্লাট মালিক বলেন, তিনি রাজশাহী নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় থিম ওমর প্লাজায় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন বহুতল ভবনের একটি ফ্লাট কিনে সেখানে বসবাস করে আসছেন। গত তিন বছরে এমপি ওই ভবনের প্রতিটি ফ্লাটের সার্ভিস চার্জ ১৫শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় নিয়ে গেছেন কোনো মিটিং ছাড়ায়। এরই মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় আবারও ১ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ৪ হাজার টাকা করেছেন। কিন্তু ওই সভাতে ফ্লাট মালিকদের উপস্থিত থাকতে আগাম জানানো হয়নি। ফলে সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি তাঁরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এমপি ফারুক চৌধুরীর নির্দেশে ওই সাতটি ফ্লাটের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমি অসুস্থ মানুষ। হঠাৎ দেখি বাড়ির বিদ্যুৎ নাই। জেনারেটরেও বিদ্যুৎ আসে না। কারণ জানতে চাইলে এমপির নিযুক্ত ফ্লাটের কর্মচারীরা জানায়, এমপি স্যারের নির্দেশে যারা গতকালকের সভায় উপস্থিত হয়নি, তাদের বাড়ির সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে।
জাহিদুল ইসলাম নামের আরেক ফ্লাট মালিক বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ বিল দেয় নেসকোকে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে তারা লাইন কাটতে পারে। কিন্তু আমার ফ্লাটের বিদ্যুৎ লাইন কিভাবে অবৈধভাবে এমপির লোকজন কাটতে পারে?
তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী শহরের কোথাও ফ্লাটের সার্ভিস চার্জ দুই হাজার টাকার ওপরে নাই। কিন্তু এমপি দফায় দফায় চার্জ বৃদ্ধি করে চার হাজার টাকায় নিয়ে গেছেন। তার পরেও মাস শেষ না হতেই আমাদের ফ্লাটের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছেন তিনি। এটি করতে পারেন না। ফ্লাট আমাদের সার্ভিস চার্জ সেটি আলাদা বিষয়। সে ক্ষেত্রে উনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ক্ষমতা পান কোথায় ?
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত রায় বলেন, ‘একজনের লাইন আরেকজন কাটতে পারেন না। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’
এ বিষয়ে জানতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।