মোঃ ইমানুর রহমান,জেলা প্রতিনিধি, খুলনা,
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় দুটি খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাধার মুখে পিছু হটেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুনুর রশীদ।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে ওড়াবুনিয়া বিলের মধুমারী ও বিষের খালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে যেয়ে বাধার মুখে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে অভিযান বন্ধ রেখে ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নভুক্ত ওড়াবুনিয়া বিলের মধুমারী ও বিষের খাল নামক দুটি খালে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পূর্ব নির্ধারিত দিন শনিবার।
৫ সেপ্টেম্বর এসিল্যান্ড সরেজমিনে যান এবং এলাকায় মাইকিং করে অবৈধভাবে দখলে রাখা খাল উন্মুক্ত করার নির্দেশ দেন। এতে ব্যাপক সাড়া দিয়ে শনিবার এলাকার তিন শতাধিক কৃষক স্বেচ্ছায় উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য ঝুড়ি কোদাল নিয়ে মাগুরাঘোনা করিম বকসের মোড়ে অবস্থান নেন।
বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানিক দলটি সেখানে পৌঁছায়। অভিযানের শুরুতেই উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক গোবিন্দ ঘোষ, আওয়ামী লীগ নেতা জি এম ফারুক হোসেন ও সুরঞ্জন ঘোষ, ছাত্রলীগ নেতা ইসলাম বাবু, মাগুরাঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম হেলাল ও আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দীনসহ আরও বেশ কয়েকজন অবৈধ দখলদারের পক্ষ নেওয়ায় বাঁধার মুখে পড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে আন্দোলনকারী বিলের জমি মালিকদের অন্যতম রবিউল ইসলাম মিঠু, আনিছুর রহমান, কৃষ্ণ পদ ঘোষসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তি অবৈধ দখলদারদের পক্ষ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। তারা মূলত অবৈধ দখলদারদের সহযোগী ও সুফল ভোগী। এরই মধ্যে আমরা নানা হুমকি-ধামকির সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে যা যা করণীয় তা করবো।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পূর্ব নির্ধারিত দিন মোতাবেক আজ মধুমারী ও বিষের খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে যাই। কিন্তু সেখানে অবৈধ দখলদারদের পক্ষে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি অভিযান পরিচালনা না করতে অনুরোধ করেন। তারা ঘেরের মাছ উঠানোর জন্য সময় চান। এ কারণে তাদের তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর ভেতরে সার্ভেয়ার দ্বারা খালের সীমানা নির্ধারণ করা হবে এবং অবৈধ দখলদাররা তাদের নিজ দায়িত্বে খাল উন্মুক্ত করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। নির্ধারিত সময় পার হলে অভিযান পরিচালনাসহ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।